নিজের সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে নিজেকেই বিয়ে করার ঘোষণা দিয়েছেন ভারতের গুজরাটের তরুণী ক্ষমা বিন্দু। একটি মন্দিরে হিন্দু রীতি মেনেই এই বিয়ে করবেন বলে ঠিক করেছেন ২৪ বছরের এইত তরুণী। তবে মন্দিরে এমন বিয়ে করতে দেয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বিজেপি নেত্রী সুনীতা শুক্লা। তিনি বিজেপির সিটি ইউনিটের উপ প্রধান।
সুনীতা শুক্লা বলেন, ‘ও যদি কোনো মন্দিরে বিয়ে করতে চায় তাহলে আমরা তা হতে দেব না। এই ধরণের বিয়ে হিন্দু ধর্মের পরিপন্থী।’ খবর টাইমস অব ইন্ডিয়ার
ক্ষমা বিন্দুকে মানসিক ভারসাম্যহীন উল্লেখ করে বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘হিন্দু শাস্ত্রে এমন কোথাও লেখা নেই, একজন ছেলে অপর একজন ছেলেকে বিয়ে করতে পারে। কিংবা দু’জন মেয়ে একে অপরকে বিয়ে করতে পারে। আর এই ধরনের বিয়েও তো হিন্দু ধর্মে কোথাও উল্লেখ নেই। মন্দিরে এই ধরনের বিয়ের অনুষ্ঠানে একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। এই বিয়ে হলে হিন্দু ধর্মে আশঙ্কা তৈরি হবে। হিন্দু জনসংখ্যা কমে যাবে। শাস্ত্রবিরুদ্ধ কোনো কাজ হলে, তা দেশের আইন-শৃঙ্খলাকেও বিপাকে ফেলবে।’
আগামী ১১জুন হবে এই বিয়ে। এরই মধ্যে বিয়ের সব আয়োজন সম্পন্ন করেছেন বিন্দু। আয়োজনেও থাকছে না কোনো কমতি। এ নিয়ে খবর প্রকাশ হওয়ায় বিব্রত বলে জানিয়েছেন তিনি। তার বাড়িতে সাংবাদিকদের প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
ক্ষমা জানিয়েছেন, সম্ভবত ভারতে এমন ‘নিজগামিতা’ আগে কখনও হয়নি। অনেক তথ্য ঘেঁটেও তিনি ভারতে এমন কোনো নারীর সন্ধান পাননি যিনি নিজেকেই নিজে বিয়ে করেছেন।
কিন্তু নিজেকে বিয়ে করার কথা মাথায় এল কী ভাবে? প্রশ্নের জবাবে ক্ষমার পাল্টা প্রশ্ন, ‘আমরা নিজেরা নিজেদের ভালবাসতে পারি, আর বিয়ে করতে পারি না?’
ক্ষমা জানিয়েছেন, তিনি নিজেকেই সবচেয়ে বেশি ভালবাসেন। আর তার সেই ভালবাসা জাহির করতে কোনও লজ্জা নেই।
ক্ষমার যুক্তি, ‘বিয়ে দু’টি মানুষের ভালবেসে একসঙ্গে থাকার কথা বলে। আমি যদি নিজেকে ভালবাসি তা হলে নিজেকে বিয়ে করতে আপত্তি কোথায়? বিয়ের দিন আমি নিজেকে নিঃশর্ত ভালবাসার অঙ্গীকার করব, আমি যেমন সেভাবে নিজেকে মেনে নেওয়ার অঙ্গীকার করব। এমনকি, প্রয়োজনে নিজের পাশে থাকারও অঙ্গীকার করব।’
ক্ষমা জানিয়েছেন, তার এই একা-বিয়েতে সম্পূর্ণ সমর্থন রয়েছে বাবা-মায়ের। তারা দু’জনেই খোলা মনের মানুষ। তবে গুজরাটের কনে জানিয়েছেন, তার এই নিজগামিতার আরও একটি লক্ষ্য রয়েছে। তিনি প্রমাণ করতে চান, মেয়েরা পুরুষের উপর নির্ভরশীল নন। তারা স্বয়ংসম্পূর্ণ।