মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষের মাত্রা বেড়েছে। এতে প্রাণে বাঁচতে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) অর্ধশতাধিক সদস্য ট্রলারে করে নাফ নদ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছেন।
আজ রোববার বিকেলে পৌরসভাস্থল জালিয়াপড়ার টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রান জেটিঘাটে নাফ নদে দুটি ট্রলারে করে তারা অবস্থান করেন। তবে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে এপারে টহল জোরদার করছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড।
এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড ও বিজিবির পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
তবে সীমান্তে দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, মিয়ানমারের যুদ্ধ বাড়ছে। এ পরিস্থিতিতে নাফ নদে দুটি ট্রলারে অর্ধশতাধিকের বেশি মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যকে দেখা গেছে। তাদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে নাফ নদে টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ বিষয়ে টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান বলেন, ‘বিকেলে নাফ নদের জেটিঘাটে দুটি ট্রলারে করে মিয়ানমারের বিজিপির বেশকিছু সদস্য প্রবেশের চেষ্টা করেন। তবে তাদের কোস্ট গার্ড বাধা দেয়।’ তিনি আরও বলেন, ‘রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে গোলার বিকট শব্দ শোনা গেছে। এতে এপারে সীমান্তবর্তী মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বেড়েছে। পাশাপাশি নাফ নদের ওপারে কয়েকটি এলাকায় আগুনে কুণ্ডলী দেখা গেছে।’
টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রান জেটিঘাটে ঘাটে ঘুরতে আসা মোহাম্মদ ইউনুছ বলেন, বিকেলে জেটি থেকে মিয়ানমারের আগুনের ধোঁয়া দেখা গেছে। এছাড়া নাফ নদে জেটিঘাটের পাশে দুটি কাঠের ট্রলারে বেশ কিছু বিজিপি সদস্য প্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের কোস্ট গার্ড বাধা দেয়।
সীমান্তের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসলাম বলেন, ‘ফের মিয়ানমার থেকে গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসে। ওপারে যুদ্ধের কারণে টিকতে না পেরে দেশটির বিজিপির সদস্যরা বাংলাদেশে পালিয়ে আসার খবর পাচ্ছি। এছাড়া সীমান্ত দিয়ে রোহিঙ্গারাও অনুপ্রবেশের চেষ্টা চালাচ্ছে বলেও শুনেছি।’
এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আদনান চৌধুরী বলেন, ‘সীমান্তে বাসিন্দারা আজকেও ওপার থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। নাফ নদের ওপারে আগুনের কুণ্ডলী দেখা গেছে। তাছাড়া এপারে সেদেশের কিছু বিজিপির সদস্য প্রবেশের চেষ্টা করছেন। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত আছেন।’
এদিকে বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘আজকেও সীমান্তের ওপারে বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। তবে নতুন করে যাতে কেউ সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য আমরা সর্বোচ্চ সর্তক অবস্থানে রয়েছি।’