নাটকসহ শিল্পসংস্কৃতির চর্চা বন্ধ করার পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিল্পকলা একাডেমির প্রধান ফটকের সামনে গতকাল বিকেলে ‘বিক্ষুব্ধ থিয়েটারকর্মী’-এর ব্যানারে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন অভিনেতা আজাদ আবুল কালাম, বটতলার নাট্য নির্দেশক মোহাম্মদ আলী হায়দার, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক কামাল উদ্দিন কবির, নির্দেশক ও শিক্ষক সামিনা লুৎফা নিত্রা, নাগরিক নাট্য সম্প্রদায়ের আলোক পরিকল্পক নাসিরুল হক খোকন, নাট্যকার মাসুম রেজা, রবীন্দ্র সৃজনকলা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নাট্যনির্দেশক সাইদুর রহমান লিপন ও অভিনেতা মাহমুদ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ‘শিল্পকলায় নাটক প্রদর্শনী বন্ধ বাংলাদেশের নাট্যচর্চার ইতিহাসে এক করুণতম দৃষ্টান্ত তৈরি করে সারাদেশের সংস্কৃতিকর্মী ও নাগরিকদের শঙ্কিত করেছে। নাটকের দল একটি যৌথ প্রতিষ্ঠান। সাধারণত সেখানে সব রাজনৈতিক দল-মত ও আদর্শের মানুষের সহাবস্থান থাকে। শিল্পচর্চায় এসব খুব বড় বাধা নয়; বরং এ সহাবস্থান আর সহিষ্ণুতার চর্চাই থিয়েটারের মূল শক্তি। আর কারও ব্যক্তিগত মতামতের দায় তার দলের ঘাড়ে দেওয়ার রাজনৈতিক সংস্কৃতি স্বৈরশাসক আমলের আচরণ। বিগত আমলে বিভিন্ন দলের বিভিন্ন মানুষের ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে তার দলকে রাজাকার ট্যাগ দিয়ে নানাভাবে হেনস্তা ও নিপীড়ন করা হয়েছে। সেই একই চর্চা নতুন বাংলাদেশে চালু হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এখন নাটক বন্ধ করা বা এর দাবি তোলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হবে না।’
সবশেষে নাটকের বন্ধ প্রদর্শনী সাত দিনের মধ্যে ফেরত, সাধারণ নাট্যকর্মী, দর্শক, নাগরিকদের জন্য শিল্পকলাকে উন্মুক্ত করা, শিল্পকলা পরিষদের আমলানির্ভরতা কমানো, শিল্পকলায় থিয়েটার দলগুলোর প্রদর্শনী বরাদ্দে স্বজনপ্রীতি বন্ধ করার দাবিসহ আরও কয়েকটি দাবি তোলেন বিক্ষুব্ধ নাট্যকর্মীরা।
প্রসঙ্গত, গত শনিবার রাজধানীতে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় একদল ব্যক্তির বিক্ষোভের মুখে দেশ নাটকের ‘নিত্যপুরাণ’-এর প্রদর্শনী মাঝপথে বন্ধ করতে বাধ্য হন একাডেমির মহাপরিচালক সৈয়দ জামিল আহমেদ। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়ে শিল্পকলা একাডেমি।