মাঝে মাঝেই আলো জ্বলে উঠতে দেখা যায় উত্তর ল্যাপল্যান্ডের আকাশে। ল্যাপল্যান্ড বলতে উত্তর নরওয়ে, উত্তর সুইডেন, উত্তর ফিনল্যান্ড এবং উত্তর ও দক্ষিণ রাশিয়াকে বোঝায়। রাতটি যদি হয় পরিষ্কার একটি তারা ঝকমকে এবং সেপ্টেম্বর ও মার্চের মধ্যেকার কোনো এক সময়, তাহলে ঠিক এই সময় আকাশে দেখা যাবে সেই আলো। যে আলো দেখে মনে হবে অলৌকিক কিছু।
ফিনল্যান্ডের দক্ষিণের অঞ্চলে এমন আলো দেখা যায় প্রতি বছরে ১০ থেকে ১২ দিন। খেয়াল রাখতে হবে তারার দিকে। রাত যদি হয় পরিষ্কার ঝকঝকে এবং তারাময়, তাহলে এই আলোর দেখা পাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।
এই আলো দেখা যায় উত্তর এবং দক্ষিণ ম্যাগনেটিক মেরুতে। যখন উত্তর মেরুতে এই ঘটনা ঘটে তখন একে বলা হয় অরোরা বোরেলিস (Aurora borealis), আর যখন দক্ষিণ মেরুতে ঘটে তখন বলা হয় অরোরা অস্ট্রালিস (Aurora australis)। অরোরার এই আলো বিভিন্ন রঙে দেখা যায়। এর মধ্যে ফ্যাকাশে সবুজ এবং গোলাপী রঙেই সবচাইতে বেশি। অরোরা দেখার এই বিশেষ সময়কে বলা হয় চুম্বকীয় মধ্যরাত্রি (magnetic midnight)। এই আলো দেখার জন্য গভীর কালো আকাশ থাকা দরকার।
সাধারণ মানুষের প্রশ্ন আলোটি কি অলৌকিক? ভেবেছেন বিজ্ঞানীরা এবং একসময় জানতে পেরেছেন এর রহস্য। সূর্য থেকে যখন চার্জ করা পারটিকেলগুলো বের হয়ে পৃথিবীর এটমকে আঘাত করে তখন এটমের ইলেক্ট্রনকে হাই এনার্জিতে ঘুরতে বাধ্য করে। এরপর যখন ইলেকট্রন লোয়ার এনার্জি অবস্থায় চলে আসে, তারা তখন ফোটন অর্থাৎ আলো রিলিজ করে। এইভাবে ইলেকট্রন অপরূপ সুন্দর অরোরা বা আলোর সৃষ্টি করে যাকে অন্যভাবে বলা হয় নর্দার্ন লাইট।
যে জায়গাতে সবচাইতে বেশি নর্দার্ন লাইট দেখার সম্ভাবনা থাকে তাকে বলা হয় অরোরাল ওভাল (Auroral oval)। এটা আলাস্কার বেশির ভাগ এলাকা, কানাডার উত্তরাঞ্চল, গ্রিনল্যান্ডের দক্ষিণের অর্ধেক অংশ, আইস্ল্যান্ড, নরওয়ের উত্তর অংশ,সুইডেন এবং ফিনল্যান্ডে দেখা যায়।