১০ লাখ কিলোমিটারের পথও পাড়ি দিতে পারবে,নতুন এক ব্যাটারি প্রযুক্তির সহায়তায় এমন বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি তৈরি করা সম্ভব, যা এমনই দাবি এর নির্মাতা গবেষকদের।
ইভির ক্ষেত্রে, ব্যাটারি সক্ষমতার পাশাপাশি অন্যতম বাধা হচ্ছে ব্যাটারির আয়ু। কিছু সময় পর ব্যাটারির আয়ু শেষ হয়ে যায় ও তা বদলানো লাগে, যা একইসঙ্গে খরচ সাপেক্ষ, পরিবেশগতভাবে ক্ষতিকর ও জটিল এক প্রক্রিয়া।
এর মধ্যে বেশিরভাগ সমস্যাই তৈরি হয় মাধ্যমিক পর্যায়ের লিথিয়াম ব্যাটারির চার্জ সঞ্চয়ের উপায় থেকে, যেগুলো সাধারণত বিদ্যুচ্চালিত গাড়িতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ শক্তিকে রাসায়নিক শক্তিতে রূপান্তর করতে হয়। পরবর্তীতে একে আবারও বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তর করার মাধ্যমে তা ব্যবহার করার সুযোগ মেলে।
এজন্য নিকেল ক্যাথোড সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপাদান ব্যবহার করা হয়, যা বিশাল পরিমাণ লিথিয়াম আয়ন সঞ্চয় করে রাখতে পারে, যা এ প্রক্রিয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে, নিকেলভিত্তিক বিভিন্ন উপাদান তৈরি হয় ছোট ছোট স্ফটিক থেকে, যেগুলোর চার্জ সংযোগ বা বিচ্ছিন্ন করলে পরবর্তীতে তা ধীরে ধীরে ক্ষয় হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে।
গবেষকরা আশা করছেন, এর পরিবর্তে বিশাল কোনো স্ফটিক বা কণা থেকে ক্যাথোডের উপাদান তৈরি করা গেলে সমস্যাটির সমাধান করা যেতে পারে, যেখানে স্ফটিক ভেঙে পড়ার সম্ভাব্য ঝুঁকিও কম।
নতুন এ গবেষণায় গবেষকরা এ ধরনের উচ্চমানের একক স্ফটিক উপাদান তৈরির সঠিক তাপমাত্রা খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছেন। এজন্য তারা বিভিন্ন ধরনের তাপমাত্রায় উপাদানটির ক্ষমতা ও দীর্ঘমেয়াদি কার্যকারিতার ভিত্তিতে এর সম্ভাব্য প্রভাব পরীক্ষা করে দেখেছেন।এতে দেখা যায়, বিশেষ এক তাপমাত্রায় উপাদানগুলোকে তুলনামূলক সহজে ও উচ্চমান বজায় রেখে তৈরি করা সম্ভব, যার স্থায়িত্বও আগের চেয়ে দীর্ঘ।
এ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেলে ‘ডেনসিফিকেশন’ নামের এক প্রক্রিয়া দেখা যায়, যেখানে উপাদানের ভেতরের কণাগুলো আকারে বড় হতে থাকে ও এর মধ্যে কোনো খালি জায়গা থাকলে তা ভরাট করে ফেলে।একবার এমনটি ঘটলে উপাদানগুলো অনেক কঠিন হয়ে যায় ও তা ভাঙেও না, যার ফলে এদের স্থায়িত্বও বেড়ে যায়।
“নিকেলভিত্তিক ক্যাথোড উপাদানের স্থায়িত্ব বাড়াতে আমরা নতুন এক ধরনের সংশ্লেষণ কৌশল বানিয়েছি,” বলেন ‘পোহাং ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’র অধ্যাপক কিউ-ইয়ং পার্ক, যেখানে কাজটি পরিচালিত হয়েছিল।“ইভি’র জন্য মাধ্যমিক পর্যায়ের ব্যাটারিকে আরও সাশ্রয়ী, দ্রুতগতির ও টেকসই করার লক্ষ্যে আমরা গবেষণা চালিয়ে যাব।”
গবেষণাটির বিস্তারিত উঠে এসেছে ‘কম্প্যারিজন স্টাডি অফ এ থার্মাল-ড্রিভেন মাইক্রোস্ট্রাকচার ইন এ হাই-নিকেল ক্যাথোড ফর লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারিস: ক্রিটিকাল ক্যালসানেশন টেম্পারেচার ফর পলিক্রিস্টালাইন অ্যান্ড সিঙ্গল-ক্রিস্টালাইন ডিজাইন’ শীর্ষক সাম্প্রতিক নিবন্ধে, যা প্রকাশ পেয়েছে ‘এসিএস অ্যাপ্লায়েড ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড ইন্টারফেইসেস’ জার্নালে।