নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মধুমতি নদী ভাঙ্গনের কবলে।এতে ভিটেমাটি, সহায়-সম্বল হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে কয়েকশ পরিবার। তীব্র ভাঙনে এরই মধ্যে নদীতে বিলীন হয়েছে আবাদি জমি, ভিটেমাটিসহ নানা স্থাপনা। বাদ যায়নি বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের খুঁটিও। ভাঙনকবলিত এসব এলাকার মানুষ এখন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
স্থানীয়রা জানান, একাধিকবার মধুমতী নদীর ভাঙনের শিকার হয়েছেন এখানকার মানুষ। গত বছর পানি উন্নয়ন বোর্ড ইউনিয়নের শিয়রবর গ্রামের ভাঙন রোধে জিও ব্যাগ ফেললেও এবার ভাঙনে ভেসে যাচ্ছে সেগুলো। ফলে আবারও ভাঙনের মুখে পড়েছে কয়েকশ পরিবার। তাই ভাঙন রোধে স্থায়ী সমাধান চান এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা ফরহাদ, গোলাম মুন্সি, ধীরেন সাধু, মালেক মোল্লা জানান, মধুমতী নদীর ভাঙনে তাদের বাড়ি বারবার ভেঙে গেছে নদীতে। বারবার ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তারা। ভাঙতে ভাঙতে আবারও নদী এখন তাদের বসতভিটার একদম কাছে চলে এসেছে। যেভাবে নদী ভাঙন শুরু হয়েছে তাতে করে বসতভিটা যে কোনো সময় নদীতে বিলীন হয়ে যাবে। এবার বাড়ি ভাঙলে মাথা গোঁজার ঠাঁই থাকবে না তাদের।
ইউনিয়নের রামকান্তপুর গ্রামের ধীরেন সাধু জানান, তাদের ৫ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত তিনবার ভাঙনের শিকার হয়েছেন তিনি। এবারও ভাঙনের আশঙ্কা ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিনি ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
বৃদ্ধ মালেক মোল্লা জানান, বসতভিটা ছাড়াও তাদের আবাদি জমি, সুপারি বাগান, পুকুরসহ ভাঙনে ৫ বিঘা জমি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অন্যের জমিতে বসতঘর তৈরি করে বসবাস করছেন। সেটিও ভাঙনের মুখে রয়েছে। এরপর স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোথায় থাকবেন সে ঠিকানাও নেই তাদের। এ কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলেন এই বৃদ্ধ। বালাম মোল্যার স্ত্রী তহমিনা জানান, ইতোপূর্বে দুইবার তাদের বসতভিটা নদীতে ভেঙে গেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আশিকুল আলম বলছেন, মধুমতী নদীর ভাঙনে বসতবাড়ি, আবাদি জমি, মাদ্রাসা, মসজিদ ভাঙনের শিকার হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে নদীতে পুরো এলাকা বিলীন হয়ে যাবে।
এ বিষয়ে নড়াইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, লোহাগড়া উপজেলার রামকান্তপুর গ্রামের ভাঙন রোধে আপাতত কোনো বরাদ্দ নেই, এ কারণে কোনো ধরনের কাজ করতে পারছি না। তবে বরাদ্দ পেলে আগামীতে ওই এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ করা হবে।
