ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এ এফ রহমান হলের ক্যান্টিনে ছাত্রলীগ নেতাদের বাকির পরিমাণ ১৭ লাখ ৯৩ হাজার বা প্রায় ১৮ লাখ টাকা বলে দাবি করেছেন হলের ক্যান্টিন মালিক বাবুল হোসেন। ২০১৯ সাল থেকে তিনি এ বাকির টাকা হিসেব করেছেন বলে জানিয়েছেন। তবে হলের শিক্ষার্থীদের মতে বাকির পরিমাণ এত বেশি হবে না।
শুক্রবার বিকেলে তিনি ৪৮ নেতার নাম ও বাকির পরিমাণ লিখে একটি তালিকা হল অফিসে জমা দিয়েছেন। তবে এর স্বপক্ষে তিনি কোনো জোরালো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। অন্যদিকে নেতারা পলাতক থাকায় তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাকির তালিকা অনুযায়ী এফ রহমান হল ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ বাকি খেয়েছেন ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা, সাধারণ সম্পাদক মুনেম শাহরিয়ার মুন খেয়েছেন ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা।
ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশী আলী আহসান রিফাতের বাকি ১ লাখ ১৮ হাজার টাকা। ছাত্রলীগ নেতা রবি ১ লাখ ১৮ হাজার, নাহিদ ও জুয়েল ১ লাখ ১৫ হাজার করে, হারুন ৭০ হাজার টাকা, রাজু ৬১ হাজার, লাভলু ৪৮ হাজার, আব্দুল আলিম ৬০ হাজার, কাজল ৭০ হাজার, নাজমুল ৩৫ হাজার শাহাদাত ১৫ হাজার টাকা বাকি দেখানো হয়েছে।
ক্যান্টিন মালিক বাবুল হোসেন বলেন, ২০১৯ সাল থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্রলীগের নেতারা আমার ক্যান্টিন থেকে নিয়মিত বাকি খেয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট ১৮ লাখ টাকার বাকি খেয়েছেন তারা। সভাপতি রিয়াজ আর সেক্রেটারি মুন দুজনই ৬ লাখের মত বাকি খেয়েছেন এই ৫ বছরে। টাকা চাইলেও তারা দিতেন না।
তিনি বলেন, এখন তারা আমাকে পথে বসিয়ে পালিয়েছেন। আমি প্রভোস্ট অফিসে এই লিস্ট জমা দিয়েছি। আমি এর বিচার চাই, আমার টাকা ফেরত চাই।
তবে এফ রহমান হলের ছাত্র তাওহীদ হোসেন বলেন, ‘বাবুল হোসেনের খাবার খুবই নিম্নমানের। তিনি ছাত্রলীগ নেতাদের তোষণ করে চলতেন। ছাত্রলীগ নেতারা বাকি খেয়েছেন তবে পরিমাণ এত বেশি হওয়ার কথা নয়।’
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. রফিক শাহরিয়ার বলেন, এর আগেও আমি ক্যান্টিন ঘুরে তার খাবারের মান নিয়ে জিজ্ঞেস করেছি, তার কাছে কেউ বাকি খায় কি না জানতে চেয়েছি। কিন্তু তিনি বরাবরই আমাকে বলেছেন তার কাছে কেউ বাকি খায় না। আমি তাকে নেতাদের নাম দিতে বলেছিলাম, তিনি দেননি।
তিনি বলেন, এত টাকা বাকি খেলে তিনি কীভাবে ক্যান্টিন পরিচালনা করেছেন আমি জানি না। তিনি আগের প্রভোস্টের কাছে কোনও অভিযোগ দিয়েছিলেন কি না সেটাও দেখতে হবে। এত টাকা বাকি থাকার পরও তিনি কীভাবে ক্যান্টিন চালিয়েছেন সেটাও দেখার বিষয়। এটি তদন্তের বিষয়। তদন্ত করে সত্যতা যাচাই করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
এর আগে কবি জসীম উদদীন হলের ক্যান্টিন চালক নাসির উদ্দীন ছাত্রলীগের ১১ নেতার থেকে ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা তালিকা প্রকাশ করেছিলেন।