বর্তমানে ডায়াবেটিস একটি সাধারণ রোগে পরিণত হয়েছে। যুবক-বৃদ্ধ থেকে শুরু করে সবার, এমনকি নবজাতকের মধ্যেও এই রোগটি দেখা যাচ্ছে সম্প্রতি। খারাপ খাদ্যাভ্যাস, কম শারীরিক পরিশ্রম এবং মানসিক চাপযুক্ত জীবনযাপনই এর প্রধান কারণ। ডায়াবেটিসের রোগীদের খাওয়াদাওয়া নিয়ে নানা বিধিনিষেধ থাকে।
যদি আপনার পরিবারের কারো ডায়াবেটিস থাকে বা আপনি নিজেও এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছেন, তাহলে এই প্রতিবেদন আপনার জন্য খুবই উপকারী। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন অনেক খাবার রয়েছে, যা ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করলে রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। শুধু তা-ই নয়, আমাদের শরীরের অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টির ঘাটতিও পূরণ করা যায়। চলুন এই ফলগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্যও ফ্ল্যাক্সসিড খুবই উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে বড় ভূমিকা পালন করে। এই বীজগুলো আপনার খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করলে আপনার পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকে। যার কারণে বারবার খেতে ইচ্ছা হয় না।এ ছাড়া ফ্ল্যাক্সসিডে উপস্থিত ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। তাই ফ্ল্যাক্সসিডে পাওয়া লিগন্যানগুলি ইনসুলিন প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতে সাহায্য করে। যা শরীরকে আরো কার্যকরভাবে ইনসুলিন ব্যবহার করতে দেয়।
করলা
তেতো হওয়া সত্ত্বেও করলা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। করলাতে উপস্থিত কিছু উপাদানের কারণে এটি শরীরে ইনসুলিনের মতো কাজ করে।ইনসুলিন একটি হরমোন, যা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। এমন পরিস্থিতিতে এটি ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। এ ছাড়া এতে ভিটামিন সি-এর মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যা শরীরের নানাভাবে উপকার করে।
নিম
আয়ুর্বেদে নিম বহু শতাব্দী ধরে বহু রোগের নিশ্চিত ওষুধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। অনেক গবেষণায়ও দেখা গেছে যে নিম ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খুবই উপকারী হতে পারে। এর রস রক্তে শর্করা কমাতে সাহায্য করতে পারে। এ ছাড়া এটি ইনসুলিনের প্রতি শরীরের সংবেদনশীলতা বাড়ায়, যা ডায়াবেটিসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
আমলা
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমলা খাওয়া ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এ ছাড়া আমলায় পাওয়া কিছু উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আপনাকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এবং পাচনতন্ত্রকে সুস্থ রাখতেও অনেক সাহায্য করে।
দারুচিনি
বাঙালিদের রান্নাঘরে থাকা একটি সাধারণ মসলা দারুচিনি। তবে শুধু এটি একটি মসলাই নয়, ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য একটি ঘরোয়া প্রতিকারও। এতে থাকা উপাদান রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া এটি ইনসুলিনের প্রতি কোষের সংবেদনশীলতা বাড়ায়, যার কারণে শরীর রক্তে চিনিকে আরো কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে সক্ষম হয়। এটি হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করতে পারে, যা প্রায়ই ডায়াবেটিসের সঙ্গে যুক্ত থাকে।