পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়ার ছিলা এলাকায় লাগা আগুন ছয় ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলেও সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসায় এবং কাছাকাছি কোনো পানির উৎস না থাকায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেননি তারা। রোববার (৫ মে) সকাল থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
শনিবার (৪ মে) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ও গুলিশাখালীর মাঝামাঝি এলাকায় এ আগুনের সূত্রপাত হয়। এরই মধ্যে আগুনে কয়েক কিলোমিটার বনাঞ্চল পুড়ে গেছে। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী নুরুল করিম রাত ১০টায় জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, আগুন লাগার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে যায়। শুরুতে আগুন নিয়ন্ত্রণে পানির উৎস খোঁজা হয়। কিন্তু কাছাকাছি কোনো পানি পাওয়া যায়নি।
তিনি জানান, অনেকটা দূরে ভোলা নদী থেকে পানি এনে আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এরই মধ্যে সন্ধ্যা নেমে আসে। ফলে আগুনের কাছে আর যাওয়া সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসী ও বনরক্ষীদের চেষ্টায় অল্প পানি সরবরাহ করে প্রাথমিকভাবে আগুন যেন ছড়াতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আগুন বেশি দূর ছড়াতে পারেনি। অল্প অল্প করে জ্বলছে। রাতের মধ্যে খুব বেশি ছড়ানোর সম্ভাবনা নেই।
আগুন সূত্রপাত সম্পর্কে জানতে চাইলে কাজী নুরুল করিম বলেন, এখনো সঠিক কারণ বের করা যায়নি। স্থানীয়রাও ভিন্ন ভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন।
এদিকে, পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে৷ কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধার স্টেশন অফিসার ওবায়দুর রহমান এবং ধানসাগর স্টেশন অফিসার রবিউল ইসলাম। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে আগুন লাগার সঠিক কারণ অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন জমা দেবে কমিটি।
বাগেরহাট জেলার মোড়েলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, শনিবার (৪ মে) দুপুরে প্রথমে আগুন লাগে সুন্দরবনের আমরবুনিয়ার ছিলা এলাকায়। পরে বিকেল সাড়ে ৪টায় আগুন ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর স্থানীয়রা ও বনরক্ষীরা মিলে শুরুতে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে বাগেরহাট ও মোরেলগঞ্জ থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট আসে। কিন্তু পানির উৎস না থাকায় সন্ধ্যা গড়িয়ে গেলেও আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। রোববার ভোর থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হবে।
বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপ-সহকারী পরিচালক সাইদুল আলম চৌধুরী জাগো নিউজকে বলেন, বিকেলে আগুনের খবর পেয়ে দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও নানা প্রতিকূলতার কারণে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে পারেনি। ঘটনাস্থল চিহ্নিত করা হয়েছে। রোববার সকাল থেকে কাজ শুরু করা হবে।
জাগোনিউজ২৪