হালকা জ্বর হলেও অনেকের ঠোঁটের কোণে ঘা হয়ে থাকে। অনেকটা ঘামাচির মতো হয়ে একসঙ্গে গোল হয়ে বের হয় ফুসকুঁড়ি। যাকে বলা হয় জ্বরঠোসা। প্রথম অবস্থায় ফুসকুঁড়ি, তারপর ঘা’তে রূপান্তরিত হয় জ্বরঠোসা।
তীব্র ব্যথা ও যন্ত্রণার কারণ হয়ে দাঁড়ায় একসময়। ঠিকমতো খাওয়া যায় না, এমনকি কথা বলতেও কষ্ট হয়! জ্বরঠোসা হলে সহজে সারতেও চায় না। এমন সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন।
জ্বরঠোসা হলে প্রাথমিক অবস্থায় কী করা উচিত তা জানা নেই অনেকেরই। ব্যথার ওষুধ কিংবা অ্যান্টিসেপটিক ক্রিম ব্যবহার না করে বরং প্রাকৃতিক উপায়ে এই জ্বরঠোসা সারাতে পারেন। জেনে নিন কীভাবে দ্রুত সারাবেন জ্বরঠোসার ব্যথা ও ঘা-
আপেল সিডার ভিনেগার
শারীরিক নানা সমস্যার সমাধান করে আপেল সিডার ভিনেগার। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করে এই দাওয়াই। আপেল সিডার ভিনেগারের সঙ্গে পানি মিশিয়ে প্রতিদিন দুইবেলা করে জ্বরঠোসার উপর লাগালেই দ্রুত সেরে যাবে।
সেইসঙ্গে ব্যথা ও ঘা দ্রুত শুকাবে এবং দাগও দূর হয়ে যাবে। পানি ছাড়া আপেল সিডার ভিনেগার ব্যবহার করবেন না, এতে জ্বালা করবে।
অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরায় থাকা বিভিন্ন পুষ্টিগুণ ক্ষত সারাতে বিবেশ কার্যকরী। জ্বরঠোসার ক্ষত নিরাময়ে অ্যালোভেরা জেল সামান্য পানিতে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। এতে চুলকানি ও ব্যথা কমবে সেইসঙ্গে ঘা দ্রুত শুকিয়ে যাবে।
আদার তেল
আদায় আছে বিভিন্ন পুষ্টিগুণ। শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার দাওয়াই এটি। বিশেষ করে ব্যথা কমাতে জাদুকরী ভূমিকা রাখে আদা। জ্বরঠোসা হলে আদার তেল ব্যবহারে দ্রুত নিস্তার পাবেন। এই তেল হার্পস ভাইরাসকে ধ্বংস করতে সক্ষম।
পুদিনার তেল
ল্যাব পরীক্ষায় দেখা যায়, পেপারমিন্ট অয়েল এইচএসভি-১ এবং হার্পস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ-২ (এইচএসভি-২) উভয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করতে কার্যকর। এই ভাইরাসগুলোই জ্বরঠোসা হওয়ার জন্য দায়ী। তাই পেপামিন্ট অয়েল ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুত জ্বরঠোসা সারবে।
গরম ও ঠান্ডা সেঁক
গবেষণা অনুসারে, জ্বরঠোসার উপরে গরম সেঁক নিলে দ্রুত ব্যথা কমবে। সেইসঙ্গে ফোলাভাব, চুলকানি থেকে মুক্তি পাবেন। সুতির কাপড় গরম করে সেঁক নিতে পারেন। যদি জ্বরঠোসার কারণে ঠোঁট ফুলে যায়; সেক্ষেত্রে ঠান্ডা সেঁক নিতে পারেন।
বেকিং সোডা
বেকিং সোডা জ্বরঠোসার উপর ব্যবহারে ক্ষত শুকিয়ে যাবে দ্রুত। সেইসঙ্গে চুলকানি থেকেও মুক্তি পাবেন। এজন্য পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে তার মধ্যে কটন বল ডুবিয়ে জ্বরঠোসার উপর ব্যবহার করুন।
কর্নস্টার্চ
বেকিং সোডার মতো কর্ন স্টার্চ দিয়েও জ্বরঠোসার ঘা সারাতে পারবেন। ক্ষত দ্রুত শুকিয়ে যাবে এবং চুলকানির উপশম ঘটবে। এজন্য পানিতে মেশানো সামান্য কর্ন স্টার্চে কটন বল ডুবিয়ে আক্রান্ত স্থানে লাগান।
রসুন
গবেষণা অনুসারে, রসুনে থাকা অ্যান্টি-ভাইরাল বৈশিষ্ট্য জ্বরঠোসা সারাতে কাজ করে। এক কোয়া রসুন থেঁতলে তার মধ্যে অলিভ অয়েল মিশিয়ে জ্বরঠোসায় ব্যবহারে উপকার মিলবে দ্রুত। এই মিশ্রণটি জ্বরঠোসায় দিনে তিনবার পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারেন।
ভিটামিন ই
ভিটামিন ই’তে থাকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা ত্বকের ক্ষতিকর কোষগুলো মেরামত করতে সহায়তা করে। জ্বরঠোসা সারাতে কাজ করে ভিটামিন ই। সেইসঙ্গে ঘা নিরাময় এবং ব্যথা কমাতে দ্রুত কাজ করে এই তেল।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
সূর্যের আলোর ক্ষতিকর রশ্মিতে জ্বরঠোসা আরও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এজন্য সরাসরি সূর্যের আলো যাতে জ্বরঠোসায় না লাগে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। আপনার ঠোঁটে এবং তার চারপাশে সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন! অবশ্যই সানস্ক্রিনে যেন এসপিএফ-৩০ থাকে।