কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে ব্যবসায়ীকে গুলি করার ঘটনা নিয়ে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে। এখনও জানা যায়নি তাঁকে কে গুলি করেছে। এদিকে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এসব ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। গ্রেপ্তার এড়াতে কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়ার জেলেপাড়া পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
গত বুধবার রাতে কয়া ইউনিয়নের বেড় কালোয়া এলাকায় তরুণ শেখ নামে এক ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ী গুলিবিদ্ধ হন। তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
তরুণ শেখ অভিযোগ করে বলেন, পুলিশের মামলায় জেলেপাড়ার লোকজন পলাতক ছিল। তারা আমার কাছে আশ্রয় নিয়েছে– এমন অভিযোগে কয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আব্দুল খালেকের ছেলে রিপন, শিপন ও স্থানীয় লিটনসহ ছয়-সাতজন রাত আড়াইটার দিকে আমার বাড়িতে আসে। বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে তারা পায়ে ও হাতে কয়েক রাউন্ড গুলি করে চলে যায়।
এ বিষয়ে কথা বলতে সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালেকের বাড়িতে গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। এ সময় তাঁর বাড়িতে ২০ থেকে ৩০ জন লোক ছিল। কথা হয় তাঁর ছেলে রিপন ও শিপনের সঙ্গে। তাদের দাবি, একটি মামলায় দীর্ঘদিন ধরে তাদের কেউ জেলে, কেউ পালিয়ে ছিল। গত বুধবার আদালত থেকে জামিন নিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি ফেরেন তারা। তারাও রাতে দুই রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন। তবে কারা এ ঘটনায় জড়িত, তারা জানেন না।
এদিকে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম, অপারেশন ও মিডিয়া) পলাশ কান্তি নাথ জানিয়েছেন, রাতে আসামি ধরতে গেলে স্থানীয় লোকজন পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে দুই রাউন্ড ফাঁকা রাবার বুলেট ছোড়া হয়। এ ঘটনায় কেউ আহত হয়েছে কিনা তা জানা নেই তাদের।
জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার বলেন, তরুণ শেখ নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁর বাঁ হাতের কবজির ওপরে এবং বাঁ পায়ের হাঁটুর নিচে গুলি লেগেছে। অস্ত্রোপচার করে গুলি বের করা হয়েছে। তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন।
এদিকে গত সোমবার পদ্মা নদীতে কর্তব্যরত অবস্থায় দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যার অভিযোগে আটজনের নামে ও অজ্ঞাতপরিচয় ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করে কুমারখালী থানায় মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে থানার উপপরিদর্শক নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। এর মধ্যে কয়েকজন জেলেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বেড় কালোয়া এলাকার জেলেপাড়ায়।
জেলে রাজুর স্ত্রী লাবনী খাতুন বলেন, মেম্বার গ্রুপের সঙ্গে জেলেপাড়ার নেতা ইয়ারুলের বিরোধ চলছে। সম্প্রতি পুলিশের মামলায় জেলেপাড়ার সব পুরুষ পালিয়েছে। অনেকেই গ্রেপ্তার হয়েছেন। সেই সুযোগে খালেক মেম্বার, তাঁর ছেলে রিপন, শিপনসহ ২০ থেকে ৩০ জন জেলেপাড়ায় এসে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন। মেয়েদের মারধর করছেন। জাল, নৌকা, টিউবওয়েল লুট করে নিয়ে গেছেন।
Leave a comment