গত বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার যে গণহত্যা চালায় সেটার বিচারের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইমস কোর্টে (আইসিসিতে) যাওয়ার দাবি তুলছেন কেউ কেউ। তবে সেই দাবি নাকচ করে দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই গণহত্যার বিচার আমাদের ট্রাইব্যুনালেই সম্ভব। আইসিসিতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তবে আইসিসি চাইলে তাদের কাছ থেকে আমরা টেকনিক্যাল সহযোগিতা নিতে পারি বলে মন্তব্য করেন চিফ প্রসিকিউটর।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তাজুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
চিফ প্রসিকিউটর বলেন, গণহত্যার ঘটনা বাংলাদেশে, আসামিরাও বাংলাদেশি, সাক্ষীরাও এদেশের। কাজেই বিচার প্রক্রিয়া এখানেই হোক। যেসব দেশের সক্ষমতা নেই সেসব দেশ আইসিসিতে মামলা পাঠাতে পারে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। এখানে সব ধরনের সক্ষমতা আছে। গণহত্যার মামলার বিচারের কাজ আমরা এখানেই করতে পারব।
এদিন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন সাভারের আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে আগামী ১৫ এপ্রিল হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এই তিন পুলিশ কর্মকর্তা হলেন: ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম ও সাবেক ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
প্রসিকিউসনের আবেদনে মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এই আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালে আজ শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম ও প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন। এ সময় প্রসিকিউট বি এম সুলতান মাহমুদসহ অন্য প্রসিকিউটররা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়া চট্টগ্রামে জুলাই-আগস্ট গণহত্যার মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিমকে আগামী ১৬ এপ্রিল সেফহোমে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি চট্টগ্রামের যুবলীগ নেতা অস্ত্রধারী মোহাম্মদ ফিরোজকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।