জুমার দিন সপ্তাহের শ্রেষ্ঠ দিন। এ দিন মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন। হাদিস শরিফে এসেছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তায়ালা মুসলিমদের জন্য জুমার দিনকে ঈদের দিন হিসেবে নির্বাচিত করেছেন। সুতরাং জুমায় যাওয়ার পূর্বে গোসল করে নেবে। আর সুগন্ধি থাকলে, ব্যবহার করবে। আর অবশ্যই মিসওয়াক করবে।’ ( ইবনে মাজাহ: ১০৯৮)।
তাই সঙ্গত কারণেই এ দিনে একে অপরকে অভিবাদন, শুভেচ্ছা জানানোর কথা আসে। বর্তমানে শুক্রবার এলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জুম্মা মোবারক’ বলে অভিবাদনের বেশ প্রথা দেখা যায়। কিন্তু শুক্রবারকে সামনে রেখে এভাবে ‘জুম্মা মোবারক’ বলে শুভেচ্ছা জানানো কি আদৌ ইসলাম বৈধতা দেয়? এ ব্যাপারে সঠিক সমাধান অনেকেই জানে না।
হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী দিনটি মুসলমানদের জন্য ঈদের দিন হলেও এ দিনের জন্য আলাদা অভিবাদনের কোনো শব্দ বা বাক্য নেই। নবি যুগ ও সাহাবায়ে কেরামের যুগে এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না। বস্তুত: ‘জুম্মা মোবারক’ এটি একটি দোয়া। শুধু দোয়া হিসেবে, কোনো প্রথা বা রীতি-নীতির পেছনে না পড়ে ‘জুম্মা মোবারক’ বলা যাবে। তাও প্রতি শুক্রবারের এটিকে আবশ্যকীয় আমল মনে করা যাবে না।
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কেউ যদি আমাদের (ইসলামের) সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ নয় এমন কোনো আমল করে, তা প্রত্যাখ্যাত হবে। (বুখারি: ৩৫০৮ , মুসলিম: ৬১)
অন্যত্রে আছে, কেউ যদি ইসলামে নতুন কোনো কিছু শুরু করে যা এর অন্তর্ভুক্ত নয়, তা বাতিল বলে গণ্য হবে। (বুখারি:২৬৯৭, মুসলিম: ১৭১৮)
আর একে অপরকে ‘জুমা মোবারক’ বলে শুভেচ্ছা জানানোর এই নব্য আবিস্কৃত প্রথা সুন্নাহ সমর্থিত কোনো আমল নয়। তাই ওলামায়ে কেরাম এটিকে বিদয়াত বলেছেন।
মূলত অভিবাদনের মধ্যে শ্রেষ্ঠ অভিবাদন হলো ইসলামী রীতিতে অভিবাদন, ‘আসসালামু আলাইকুম’। মানুষের সুখে দুঃখে এ অভিবাদন আশীর্বাদ নিয়ে আসবে। হতে পারে সেদিন সকালে টর্নেডো হচ্ছে, মুষলধারে চরম বৃষ্টি হচ্ছে, ঘর-বাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, বন্যায় অঞ্চল প্লাবিত হচ্ছে, স্ত্রীর/ সহপাঠির সাথে ঝগড়া হয়েছে। সর্বাবস্থায় “আসসালামু আলাইকুম” অর্থাৎ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক”। এটাই একমাত্র সঠিক ও যথার্থ অভিবাদন পদ্ধতি বা রীতি।
আল্লাহ সবাইকে বুঝার ও আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।