টানা চার দিন পতনের পর গতকাল সোমবার ঢাকার শেয়ারবাজারের বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে। দু-তিনটি ছাড়া প্রায় সব খাতে দর হারানো শেয়ার সংখ্যার তুলনায় দর বৃদ্ধি পাওয়া শেয়ার ছিল বেশি। তবে অল্প কিছু শেয়ার ছাড়া দর বৃদ্ধির হার তুলনামূলক কম। সূচক বৃদ্ধির সঙ্গে লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা বেড়েছে।
এদিন ২২১ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়লেও ৫ শতাংশের ওপর দর বেড়েছে মাত্র ১৮টির। তুলনামূলক বেশি দর বেড়েছে বীমা এবং সিমেন্ট খাতের শেয়ারের। ব্যতিক্রম ছিল সিরামিক খাত। ব্যাংক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং সেবা ও নির্মাণ খাতে ছিল মিশ্রধারা।
দিনের লেনদেন শেষে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৯৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ২২১টির দর বেড়েছে। কমেছে ১০০টির। শেষ পর্যন্ত দর অপরিবর্তিত ছিল ৭৪টির।
বেশির ভাগ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় ডিএসইএক্স সূচক ৩৩ পয়েন্ট বেড়ে ৫১৯৮ পয়েন্টে উঠেছে। সূচকের ওঠানামা পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বাধিক বিকন ফার্মার শেয়ারদর বৃদ্ধিতে সূচকে যোগ হয় সাড়ে ৭ পয়েন্ট। এ ছাড়া খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ ইন্ডাস্ট্রিজ, পূবালী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মা, রবি, বেক্সিমকো ফার্মা, পাওয়ার গ্রিড, প্রাইম ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশনস এবং বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ারদর বৃদ্ধি আরও প্রায় ১৬ পয়েন্ট যোগ করেছে। বিপরীতে ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর কমায় সূচক হারিয়েছে ১১ পয়েন্ট, ব্র্যাক ব্যাংকের কারণে ১ পয়েন্ট। তবে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বৃহৎ বাজার মূলধনি কোম্পানিসহ বেশির ভাগ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় সূচক শেষ পর্যন্ত ঊর্ধ্বমুখী থেকেছে।
এদিন ঢাকার শেয়ারবাজারে ৩৬২ কোটি ৬৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা আগের দিনের তুলনায় ৫১ কোটি টাকা বেশি। একক খাত হিসেবে ব্যাংক কিছুদিন ধরে লেনদেনের শীর্ষ অবস্থান ধরে রেখেছে। গতকালও একই অবস্থা ছিল। এদিন এ খাতের লেনদেন হওয়া শেয়ারের বাজারমূল্য ছিল ৬৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের সাড়ে ১৮ শতাংশ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ কোটি ২৩ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতের, যা মোট লেনদেনের পৌনে ১৩ শতাংশ।
এদিন ডিএসইতে প্রায় ১০ শতাংশ দর বৃদ্ধি নিয়ে দর বৃদ্ধির তালিকার শীর্ষে ছিল ইনফরমেশন সার্ভিসেস। ৯ শতাংশের ওপর দর বৃদ্ধি নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল খান ব্রাদার্স পিপি, অগ্নি সিস্টেমস, বিকন ফার্মা ও সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ।
বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউস কর্মকর্তা বলেন, শেয়ারবাজারের গতি-প্রকৃতি বোঝা যাচ্ছে না। সবার মধ্যে হতাশা কাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এ ধারা আরও কয়েক মাস চলতে পারে। দেশে সার্বিক বিনিয়োগে মন্দা চলছে। রাজনৈতিক অস্থিরতা আছে। এর মধ্যে ব্যাংক সুদের উচ্চহার শেয়ারবাজারমুখী তারল্যপ্রবাহ ব্যাপকভাবে কমে গেছে। এতে লেনদেন কমছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগও অনেক কম।
Leave a comment