ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে একটি ‘গঠনমূলক ও ইতিবাচক’ ফোনালাপ হয়েছে। এই কথোপকথনের পর জেলেনস্কি জানিয়েছেন, দুই পক্ষই আশাবাদী যে চলতি বছরেই যুদ্ধের ইতি টেনে টেকসই শান্তি প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
এক বিবৃতিতে জেলেনস্কি জানান, ফোনালাপটি ছিল অত্যন্ত খোলামেলা এবং অর্থবহ। আমরা একমত হয়েছি, যুদ্ধের অবসান এবং একটি স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করতে ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবে। আমরা বিশ্বাস করি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমেরিকার সঙ্গে মিলে চলতি বছরেই শান্তির সম্ভাবনা বাস্তবে রূপ নিতে পারে।
নির্বাচনের প্রচারণায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বারবার বলেছিলেন, হোয়াইট হাউসে ফিরে গেলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই ইউক্রেন যুদ্ধের ইতি টানবেন।
ওয়াশিংটন এবং কিয়েভের পক্ষ থেকে রাশিয়ার প্রতি একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, যার আওতায় স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রে ৩০ দিনের জন্য লড়াই বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে। মস্কো এই প্রস্তাবে মৌখিকভাবে সম্মতি দিলেও একাধিক কঠোর শর্ত সামনে এনেছে।
রাশিয়া ২০২২ সাল থেকে ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলের কিছু অংশ দখল করে রেখেছে এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ছাড়াই সেগুলোকে নিজেদের অংশ হিসেবে দাবি করে আসছে। তবে এসব অঞ্চলের ওপর তাদের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ এখনও প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
রাশিয়া বরাবরের মতো ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদান এবং যুদ্ধ শেষে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিরোধিতা করেছে। পাশাপাশি, তারা ইউক্রেনে একটি নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবিও জানিয়েছে।
জেলেনস্কির পক্ষ থেকে সাম্প্রতিক আলোচনায় একটি ভূখণ্ড বিনিময়ের প্রস্তাব তোলা হয়েছিল। প্রস্তাবে বলা হয়, গত আগস্টে ইউক্রেনের সেনাদের অভিযানে দখল করা রাশিয়ার পশ্চিম কুরস্ক অঞ্চলের কিছু এলাকা মস্কোকে ফিরিয়ে দেওয়া হবে, বিনিময়ে রাশিয়ার দখলে থাকা ইউক্রেনের কিছু অঞ্চল ফিরে পাওয়া যাবে। তবে ক্রেমলিন দ্রুতই এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে।
এদিকে পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে ফোনালাপের পর, রাশিয়া বেশ কয়েকটি কঠিন শর্ত সামনে এনেছে, যা আসন্ন শান্তি আলোচনাকে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।