ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে কক্সবাজারে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। আজ বুধবার সকাল থেকে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে বিকেল থেকে ঝড়ো হওয়া শুরু হয়েছে। এর ফলে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে যাত্রীবাহী সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এ বিষয়য়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে এরই মধ্য টেকনাফে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এর ফলে টেকনাফ এবং সেন্টমার্টিন থেকে সব ধরনের যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। এছাড়া শাহপরীর দ্বীপের পাশাপাশি সেন্টমার্টিনকে গুরুত্ব দিয়ে খোঁজ খবর রাখা হচ্ছে।’ তিনি
আরও বলেন, ‘উপজেলা সব আশ্রয় কেন্দ্রে প্রস্তুত রয়েছে। এছাড়া সব ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের সর্তক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৬৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে টেকনাফ উপকূলীয় উপজেলা সকাল থেকেই মেঘাচ্ছন্ন থাকলেও বিকেল থেকে ঝড়ো হাওয়া শুরু হয়। এর ফলে আবহাওয়া অফিস থেকে মোংলা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অন্যদিকে সীমান্তের নাফ নদ ও বঙ্গোপসাগরে অবস্থানের কারণে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র প্রভাবে উপজেলায় শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনের মানুষ দুশ্চিন্তায় আছেন। কেননা সম্প্রতি সময়ে জোয়ারের পানি বৃদ্ধির কারণে ঢেউয়ের আঘাতে শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম বেড়িবাঁধের সিসিব্লকগুলো ধসে পড়ছে। এছাড়া সাগরে মাঝখানে বসতি হওয়ায় সেন্টমার্টিনের মানুষের মাঝে ভয়ভীতি কাজ করছে। যদিও ২০২২ সালের জুনে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধানে ১৫১ কোটি টাকায় ৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মিত হয় শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিম ও দক্ষিণ পাশে।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা মো. শাহীন আলম বলেন, ‘সম্প্রতি জোয়ারের পানি বৃদ্ধির পাশাপাশি ঢেউয়ের আঘাতে বেড়ি বাধের ব্লকের ধসে পড়েছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে দ্বীপের মানুষজন আতঙ্কে আছেন। বিশেষ করে দ্বীপের বেড়ি বাঁধের আশপাশে বসবাসকারীরা খুব বেশি ভয়ভীতির মধ্য রয়েছে।’
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে বাতাস শুরু হয়েছে। তবে এখনো খুব বেশি প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। আশা করি আমরা নিরাপদে আছি।’
জানতে চাইলে সেন্টমার্টিন ইউপি চেয়ারম্যান মো. মুজিবুর রহমান বলেন, ‘দ্বীপের ঘূর্ণিঝড় দানা’র তেমন কোনো প্রভাব দেখা যাচ্ছে না। তবু সাগরের বুকে বসতি হওয়ায় আমরা সর্তক অবস্থানে রয়েছি।’
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌ রুটের বোট মালিক সমিতির সভাপতি আবদুর রশিদ বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে এই রুটের সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।’