গল্লামারীতে নির্মাণাধীন সেতুর কাজের অগ্রগতি, যানজট নিরসন ও ময়ূর নদী সংস্কার সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভা আজ সোমবার বেলা ১১টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। খুলনার বিভিন্ন সংস্থা, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম।
সভায় খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম মিরাজুল ইসলাম, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম, সড়ক ও জনপথ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান মো. আব্দুল কাদের এবং খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী কমিশনার খোন্দকার হোসেন আহমদ স্ব স্ব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিত্ব করেন।
সভায় বক্তারা বলেন, গল্লামারীতে নির্মাণাধীন সেতুর কাজ দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। ফলে ময়ূর নদীর উভয় পাড়ে প্রতিদিনই সৃষ্টি হচ্ছে অসহনীয় যানজট। এতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সাধারণ লোকজনকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। যার কারণে সেতু নির্মাণের সাথে সংশ্লিষ্টদের প্রতি শিক্ষার্থী ও সাধারণ লোকজনের ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। এমতাবস্থায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে সঠিক ব্যবস্থা না নিলে যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এটা নিয়ে যথাসম্ভব শীঘ্রই একটি সমাধানে আসা উচিত।
সভায় সকল পক্ষের আলোচনা শেষে গল্লামারী সেতুর দুই পাশের ফেন্সিং এবং ডিভাইডার অপসারণ করে সড়কের প্রশস্থতা বৃদ্ধি, সেতুতে ওঠা-নামার সংযোগ সড়কে রক্ষণাবেক্ষণ, ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়ন, অস্থায়ী কাঁচাবাজার-স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মাসিক সমন্বয় সভা আয়োজনের জন্য খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে খুলনার বিভিন্ন বিভিন্ন সংস্থা, প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এ ছাড়া আগামী ৭ দিনের মধ্যে (১১ নভেম্বর) সেতুর নির্মাণাধীন কাজ পুনরায় শুরু করা এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়। এতে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্মতি দেন।
সভায় আরও জানানো হয়, খুলনা শহরে মাত্রাতিরিক্ত হারে ইজিবাইকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে, তাদেরকে শৃঙ্খলায় আনা প্রয়োজন। এ ছাড়া গল্লামারী সেতুর ওপর দিয়ে পরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে ভিন্ন রুট ব্যবহারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাগিদ দেওয়া হয়। পাশাপাশি সেতুর দুই পাশের কমপক্ষে ৫০ মিটারের মধ্যে যানবাহন পার্কিং করা থেকে বিরত রাখতে ট্রাফিক বিভাগের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। একই সাথে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ময়ূর নদীর পানি নিষ্কাশনের স্থানটি দখল করে গড়ে ওঠা স্থাপনা উচ্ছেদ করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ময়ূর নদীতে পানি চলাচলের স্থানটি খুলে দিতে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করা হয়।
উপাচার্য ছাড়াও এ সভায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশিদ খান, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এস এম মাহবুবুর রহমান, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত, খানজাহান আলী হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. খসরুল আলম, খান বাহাদুর আহ্ছানউল্লা হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. শরিফ মোহাম্মদ খান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. সফিকুল ইসলাম, দি অফিস অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. আশিক উর রহমান, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুজ্জামান, নির্বাহী প্রকৌশলী সেখ সাইফুল ইসলাম বাদশা, উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (সওজ) সাগর সৈকত মন্ডল, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এনডিই লিমিটেড এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক অপূর্ব কুমার বিশ্বাস উপস্থিত থেকে মতামত প্রদান করেন।