গর্ভবতী নারীদের অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। খাদ্যভ্যাসেও আনতে হয় পরিবর্তন। এসময় স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া যেমন জরুরি, তেমনি কিছু খাবার এড়িয়েও চলতে হয়। গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খেতে নিষেধ করা হয় তাদের মধ্যে অন্যতম হলো তেঁতুল ও কাঁচা পেঁপে। সাধারণত বাড়ির বড়রা গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই এসব খাবার না খাওয়ার ব্যাপারে সতর্ক করেন। এবং পুরো প্রেগন্যান্সিতে নারীরা এ খাবারগুলো এড়িয়ে চলেন। প্রশ্ন হলো, গর্ভাবস্থায় তেঁতুল ও কাঁচা পেঁপে খেলে কী হয়? আসলেই কি এ খাবার খেলে গর্ভপাত হয়?
ভারতীয় স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. পূরবী মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন উত্তর। তিনি বলেন, ‘বছরের পর বছর মুখে মুখে এই কথা চলে আসছে। আর আমিও গর্ভবতীদের তেঁতুল খেতে বারণ করি। কারণ, এই টক জাতীয় ফল খেলে গ্যাস, অ্যাসিডিটি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এমনকি হতে পারে পেটে ব্যথাও। আর গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা হওয়া কোনো ভাবেই কাম্য নয়। তাই এই সময় তেঁতুলের থেকে দূরে থাকতে হবে। এতে গ্যাস, অ্যাসিডিটি এবং পেটে ব্যথার মতো সমস্যা প্রতিরোধে এগিয়ে থাকবেন। তবে তেঁতুলের জন্য গর্ভপাত হয় না। এটা পুরোপুরি ভুল ধারণা।’
গর্ভাবস্থায় পেঁপে খেলে কী হয়?
তেঁতুলের পাশাপাশি এই সময় পেঁপে খেতেও বারণ করা হয়। ডা. মুখোপাধ্যায় জানালেন, গর্ভাবস্থায় পেঁপে খেলে অনেকের হুট করে ডায়রিয়া শুরু হতে পারে। সেই সঙ্গে পেটে ব্যথা, বমি হওয়ার আশঙ্কাও কয়েকগুণ বাড়ে। যার ফলে বিপদে পড়েন হবু মায়েরা। তাই এই সময়টায় পেঁপে খাওয়াও চলবে না। তার বদলে অন্যান্য ফল অনায়াসে খাওয়া যায়। তাতে শরীরে ভিটামিন ও খনিজের অভাব মিটে যাবে। সেই সঙ্গে দেহে প্রবেশ করবে উপকারী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট।
মদ্যপান ও ধূমপান থেকে সাবধান
গর্ভাবস্থায় মদ্যপান করলে বাচ্চার ভয়াবহ ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এক্ষেত্রে গর্ভস্থ সন্তানের ক্রোমোজমে ক্ষতি হতে পারে। যার জন্য জন্মগত কোনও সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এমনকি গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে। তবে শুধু মদ্যপান নয়, এর পাশাপাশি ধূমপান করলেও ঠিক একই সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। তাই গর্ভাবস্থায় ধূমপান করাও যাবে না।
এসময় কী খাবেন?
গর্ভাবস্থায় সুষম খাবার খেতে হবে। পাতে রাখুন মাছ, মাংস, ডিম, সয়াবিন, দুধ, ছানা, দই, ফল, শাক ও সবজি। এর পাশাপাশি ডাল, ভাত, রুটির মতো খাবারও খেতে হবে। এতে দেহে পুষ্টির ঘাটতি মিটবে। একাধিক সমস্যা দূর হয়ে যাবে। তবে গর্ভাবস্থায় বাইরের খাবার খাবেন না। এমনকি মিষ্টি খাওয়াও যতটা সম্ভব কমিয়ে ফেলতে হবে।