যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত, গরমকালটা তাঁদের জন্য বিরক্তিকর। কারণ ভ্যাপসা গরমে ত্বক ঘামে বেশি। আর ঘামের একটি বড় অংশে থাকে তেল বা সিবাম, যার কারণে মুখ আরও তৈলাক্ত হয়ে যায়। এ সমস্যা থেকে বাঁচতে গরমকালে ত্বক নিয়মিত পরিষ্কার রাখা জরুরি। না হলে অতিরিক্ত তেল, ময়লা ও মৃত কোষ মিলে ঘর্মগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যাবে। বেশি বেশি ব্রণের সৃষ্টি হবে। যাঁদের ব্রণের সমস্যা, তাঁদের তেলযুক্ত বা অয়েল বেজড মেকআপ নেওয়া থেকে বিরত থাকা ভালো। বরং তাঁদের জন্য মিনারেলভিত্তিক ফাউন্ডেশন বা ফেস পাউডার মানানসই।
সেই সঙ্গে যাঁদের এমন ত্বক, তাঁদের প্রচুর পানি পান করতে হবে। তৈলাক্ত ও অধিক মসলাযুক্ত তেলেভাজা খাবার যেমন সমুচা বা পাকোড়া, মুরগিভাজা, ফ্রেঞ্চফ্রাই ইত্যাদি না খেয়ে বেকড বা সেদ্ধ খাবার, যেমন সমুচা-পাকোড়া বা মোমো খাওয়া ভালো। অতিরিক্ত শর্করা ও চর্বিসমৃদ্ধ খাবার, যেমন রসগোল্লা, সন্দেশ, বালুশাই, পেস্ট্রি না খেয়ে দুধ দিয়ে তৈরি ঘরে বানানো হালকা মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতে পারেন। এই যেমন দই, পুডিং, পায়েস ইত্যাদি। অতিরিক্ত চর্বিসমৃদ্ধ খাবার, যেমন পরোটা, লুচি, মোগলাই, কাবাব, পোলাও, রোস্ট, রেজালা খাবেন না। বদলে রুটি দিয়ে মুরগি, গরু বা খাসির বেকড বা গ্রিল করা মাংস খাওয়া উচিত। তার সঙ্গে প্রচুর পানি ও ফলমূল খেতে পারলে ভালো হয়।
দুই-তিন ঘণ্টা পরপর পানি দিয়ে মুখ ধুতে হবে। ত্বকের ধরন বুঝে ফেস মাস্ক বা এক্সফলিয়েটর ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্রণপ্রবণ ত্বকে জেলভিত্তিক ময়েশ্চারাইজার ভালো। দিনের বেলায় বাইরে যেতে হলে সূর্যরশ্মির প্রকোপ থেকে বাঁচার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। তবে গরমকালে তৈলাক্ত ত্বকে ক্রিমের বদলে সানস্ক্রিন লোশন বা পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে।
এবার জেনে নিন যে নিয়মগুলো অনুসরণ করলে সব সময় ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে
১. শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষানির্বিশেষে পর্যাপ্ত পানি পান করবেন।
২. ত্বকের ধরন বুঝে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।
৩. অতিরিক্ত শর্করা, লবণাক্ত খাবার এবং ফলমূলের কনসেনট্রেটেড জুস বর্জন করা উচিত।
৪. অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট বেশি আছে, এমন শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে খেতে হবে।
৫. দৈনিক সাত থেকে আট ঘণ্টা ভালো ঘুম দরকার।
৬. দিনের বেলায় কম সময় রোদে থাকা উচিত। রোদে বের হলে ছাতা, টুপি ও সানগ্লাস ব্যবহার করুন। ত্বকে ভালো মানের সানব্লক লাগাবেন।
৭. রাতে ঘুমানোর আগে আই কেয়ার ক্রিম ব্যবহার করুন। এতে চোখের নিচ বিবর্ণ হবে না।
৮. চেহারার জন্য ভিটামিন সিসমৃদ্ধ সিরাম এবং হায়ালুরনিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ কসমেটিক ব্যবহার করা যেতে পারে।
৯. দুই থেকে তিন ঘণ্টা পরপর পানি দিয়ে মুখমণ্ডল ধোয়া উচিত।
১০. সব ধরনের মানসিক চাপ থেকে দূরে থাকুন।