মোংলা বন্দরে খালাস হচ্ছে একের পর এক আমদানি করা গাড়ি। অন্য বন্দরের তুলনায় এ বন্দরে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধাসহ রয়েছে গাড়ি রাখার সেড ও ইয়ার্ড, আর জাহাজ জট না থাকায় ব্যবসায়ীরা এ বন্দরকেই বেছে নিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবারও ১ হাজার ২৬৬টি গাড়ি নিয়ে জাপান থেকে সরাসরি বন্দরে ভিড়ে খালাস করে এমভি মালেশিয়া স্টার নামের বিদেশী জাহাজ। সংশ্লিষ্টরা বলছে, পদ্মাসেতু সুফলে ঢাকার সাথে দূরত্ব কম থাকায় গাড়ির বেশীর ভাগই এ বন্দর দিয়ে খালাসে উৎসাহী হচ্ছে আমদানিকারকরা।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মেসার্স এনশিয়েন্ট স্টিমশিপ লিঃ কর্তৃপক্ষ জানায়, দেশ-বিদেশী ব্যবসায়ীদের সুবিধা বাড়াতে বিদেশ থেকে আমদানিকরা রিকন্ডিশন গাড়ি রাখার জন্য তৈরি করা নতুন নতুন সেড ও ইয়ার্ডে পর্যাপ্ত জায়গা করে রেখেছে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। তাই গাড়ি আমদানিকারকরা এখন মোংলা বন্দর দিয়েই বেশীর ভাগ গাড়ি খালাস করছে।
গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় জাপানের তৈরি ১ হাজার ২৬৬টি রিকন্ডিশন গাড়ি নিয়ে জাপানের পোর্টল্যান্ড বন্দর থেকে সরাসরি মোংলা বন্দরে এসে নোঙ্গর করে মালেশিয়ান পতাকাবাহী বৃহত্তম বাণিজ্যিক জাহাজ এমভি মালেশিয়া স্টার।
চলতি অর্থ বছরের জুলাই থেকে এ পর্যন্ত ৯টি জাহাজে মোট ৮ হাজার ৭৫৩টি গাড়ি খালাস হয়েছে মোংলা বন্দরে। এর মধ্যে এক্সিও, প্রিমিও, এলিয়ন, অ্যাকুয়া, প্রাডো, নোয়া, মিনিবাস ও এ্যাম্বুলেন্সসহ একাধিক ব্রান্ডের রিকন্ডিশন গাড়ি রয়েছে বিাভন্ন ব্যবসায়ীদের আমদানিকরা। জাহাজটি গত ২ নভেম্বর জাপানের পোর্টল্যান্ড বন্দর থেকে জাপানী তৈরি এক হাজার ২৬৬টি গাড়ি নিয়ে সরাসরি বাংলাদেশের মোংলা বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে “এমভি মালয়েশিয়া স্টার”। নৌপথ পাড়ি দিয়ে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোংলা বন্দরের ৫ নম্বর জেটিতে নোঙ্গর করে। এদিন দুপুরের পালা থেকে খালাস কাজ শুরু করে গাড়ি খালাসকারী প্রতিষ্ঠান মেসার্স খুলনা ট্রেডার্স লিমিটেডের প্রতিনিধিরা। বন্দরে জাহাজ জট না থাকায় মোংলা বন্দরের জেটি এলাকায় গাড়িগুলো খালাস করতে মাত্র ১৬ ঘন্টা সময় লেগেছে বলে জানিয়েছে জাহাজটির শিপিং এজেন্ট কর্তৃপক্ষ। খালাস শেষে বন্দরের জেটির ইয়ার্ড ও সেডে সারিবদ্ধ করে রাখা হয় গাড়িগুলো। পর্যাক্রমে গাড়িগুলো সড়ক পথে দেশীয় আমদানিকারক বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের শো-রুমে নিয়ে যাওয়া হবে।
মেসার্স ট্রাস্ট অটো কার’র প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম সম্রাট বলেন, অন্যান্য বন্দরের তুলনায় মোংলা বন্দরে বেশি সুযোগ সুবিধা থাকায় মোংলা বন্দরকে বেছে নেয়া হয়েছে। কারণ, পদ্মা সেতু চালু ও সড়ক পথের অবকাঠামোগত দিক ঠিক হওয়ায় ঢাকার সঙ্গে মোংলা বন্দরের দূরত্ব কমেছে, ফলে ব্যবসায়ীদের সময় ও অর্থ দু’টোই সাশ্রয় হচ্ছে। আগে মোংলা বন্দর থেকে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগতো ১২ থেকে ১৪ ঘন্টা, আর এখন মাত্র ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘন্টায় ঢাকায় থেকে মোংলায় আবার মোংলা থেকে ঢাকায় পৌঁছানো যায়। এছাড়া দেশের বড় বড় মেঘা প্রকল্পে পণ্যের বেশীর ভাগ চালান মোংরা বন্দর দিয়ে খালাস করা হচ্ছে। তাই সময় ও অর্থ দুই দিকে ব্যবসায়িক সুবিধার্থে মোংলা বন্দরে গাড়ি খালাস করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্যে।
গত ১৫ সেপ্টেম্বর ২০ ঘন্টায় প্রায় ৭৯৫টি গাড়ি খালাস করে মোংলা বন্দর ত্যাগ করেছিল একই জাহাজ “এমভি মালেশিয়া স্টার”।