নিজের চতুর্থ বাজেট প্রস্তাব প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, গত তিন বছর তার দেওয়া বাজেটে কেউ ঠকেনি, এবারও কেউ ঠকবে না। এজন্য সবাইকে তার দেওয়া বাজেট প্রস্তাবের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।
শুক্রবার (১০ জুন) বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে বেশ কয়েকজন মন্ত্রী এবং আর্থিক খাতসংক্রান্ত বিভিন্ন বিভাগের প্রধানরা অর্থমন্ত্রীকে সহযোগিতা করেন। সংবাদ সম্মেলনে বাজেট নিয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) জাতীয় সংসদে আগামী অর্থবছরের জন্য ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন অর্থমন্ত্রী। প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে ৫ দশমিক ৬ শতাংশে রাখতে চায় সরকার।
এবারের বাজেট প্রসঙ্গে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, এই বাজেট প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সহায়ক বাজেট। দেশের মানুষের সহায়ক বাজেট। এই বাজেটে যারা ব্যবসায়ী তারাও উপকৃত হবে। যারা গরিব তারাও উপকৃত হবে। সবাইকে উপকৃত করার জন্য আমরা এই বাজেট তৈরি করেছি।
সবাইকে বাজেটের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, গত তিন বছর আপনারা ঠকেননি। যা বলেছি তাই করেছি। আমি আবারও বলছি, গরিব হওয়া যে কত কষ্টের সেটা আমি ভালোভাবেই জানি। প্রত্যকটা গরিব মানুষের কথা আমরা চিন্তা করি।
এই বাজেট বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হবে বলে মনে করেন অর্থমন্ত্রী। তবে এই বাজেট বাস্তবায়ন করা চ্যালেঞ্জ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সব জায়গায় চ্যালেঞ্জ থাকে। চ্যালেঞ্জের সাথে সুযোগ সুবিধাও থাকে। আমি সুযোগ-সুবিধায় বিশ্বাস করি।’
kamal3
কালো টাকা সাদা করা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘টাকা ডিজিটাল মাধ্যমে পাচার হচ্ছে। নরওয়ে, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানিসহ উন্নত দেশও এ ধরনের সুযোগ দেয়। নানা কারণে টাকা পাচার হয়, কোনো প্রমাণ ছাড়া এগুলোর বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া যায় না। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে অ্যাকশনও নেওয়া হচ্ছে প্রমাণসাপেক্ষে। এগুলো আমরা চেষ্টা করছি ফেরত আনতে। আপনার বাধা দিয়েন না। বাধা দিয়ে লাভ কী।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এগুলো কালো টাকা না বলে অপ্রদর্শিত অর্থ বলি। আমরা এ দেশের মানুষের কল্যাণেই এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
‘মেড ইন বাংলাদেশ’-এর ওপর সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘গত বাজেট থেকেই একটি বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছি। সেটা হলো ‘মেড ইন বাংলাদেশ’। যদি দেশের ভেতরে কোয়ালিটিসম্পন্ন পণ্য উৎপাদিত হয়, তাহলে বিদেশ থেকে আনাটাকে আমরা ভালো দেখি না। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করে আনাকে আমরা নিরুৎসাহিত করি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, বাংলাদেশের মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (সিএজি) মুসলিম চৌধুরীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
পি এস /এন আই