গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর ইসরাইলি বাহিনীর অমানবিক ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করেছেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সোমবার (৭ এপ্রিল) সকাল সাড়ে দশটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদি চত্ত্বরে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ পালিত হয়। এতে হাজারের অধিক শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী অংশগ্রহণ করেন।
এসময় সমাবেশে বক্তারা অবিলম্বে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা বন্ধে বিশ্ব নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। একইসাথে ফিলিস্তিনের মানুষদের প্রতি সবাইকে সহায়তার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান। এসময় হাদী চত্বরে সমবেত হয়ে তারা, ‘ফ্রি ফ্রি প্যালেস্টাইন, উই ওয়ান্ট জাস্টিস, নারায়ে তাকবীর, আল্লাহ আকবর’ স্লোগান দিতে থাকেন।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ রেজাউল করিম বলেন, ‘ফিলিস্তিনের মানুষরা আজ পরাধীন। পাখির মত মারা হচ্ছে তাদেরকে। নামাজরত অবস্থায় তারা মারা যাচ্ছে। আল্লাহ ছাড় দেয় কিন্তু ছেড়ে দেয় না কখনো। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করি আল্লাহ তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন করার সুযোগ করে দিক।’
উপাচার্য আরও বলেন, ‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি নেই কিন্তু এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সবসময় রাজনীতি সচেতন। সত্যের পক্ষে থাকলে সত্যের জয় অবশ্যই হবে। খুলনার সর্বস্তরের জনগণের প্রতি আহ্বান জানাবো আসুন আমরা একসাথে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়াই।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. মোঃ হারুনর রশীদ খান বলেন, ‘আজ কোথায় বিশ্ব? কোথায় মানবতা? যারা মানবতার কথা বলেন তাঁরাই আবার ফিলিস্তিনের পক্ষের মানুষদের ভিসা বাতিল করছে। মজলুম সবসময় মজলুম থাকে না৷ বিজয় সুনিশ্চিত। প্রতিবাদ বিভিন্ন মাধ্যমে হতে পারে। ফিলিস্তিন স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. নুরুন্নবী বলেন, ‘মুমিন কখনো নিরাশ হয় না। প্যালেস্টাইনের বিষয়ে আমরা কখনও নিরাশ হবো না। পৃথিবীর সকল জায়গা থেকে আমাদেরকে ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়াতে হবে। ইনশাআল্লাহ ফিলিস্তিন একদিন মুক্ত হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক ড. নাজমুস সাদাত বলেন, ‘আমাদের ভাইদেরকে পাখির মত মেরে ফেলা হচ্ছে। শুধুমাত্র ইসরায়েলি পণ্য বর্জন না পুরো পশ্চিমা বিশ্বের দ্বিচারিতার বিরুদ্ধে আমাদেরকে দাঁড়াতে হবে। যার যার জায়গা থেকে একত্রিত হয়ে দাঁড়াতে হবে। পণ্য বর্জন করতে হবে। আমাদেরকে আওয়াজ তুলতে হবে।’
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষক মাহমুদ সাকি বলেন, ‘আমাদের আর বসে থাকলে চলবে না। সমগ্র বিশ্বের জনগণকে একত্রিত হতে হবে। আমাদের অ্যাটম বোমা দরকার নাই। আমাদের আওয়াজটাই যথেষ্ট।’
ইংরেজি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘আমাদেরকে শক্ত অবস্থান নিতে হবে। ইসরায়েলি পণ্য আমাদেরকে বর্জন করতে হবে। ফিলিস্তিন স্বাধীন না হওয়া পর্যন্ত আমাদেরকে রাজপথে থাকতে হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী তমিজউদদীন বলেন, ‘আমাদেরকে নামাজ পড়ে ফিলিস্তিনের ভাইদের জন্য দোয়া করতে হবে। আল্লাহ তাদেরকে যেন জালিমদের হাত থেকে বাঁচায়।’
হাদী চত্বরে সমাবেশ শেষে সকাল সাড়ে ১১ টায় ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন কর্মসূচি’ এর অংশ হিসেবে প্রতিবাদ সমাবেশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা হাদী চত্বর থেকে ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে অবস্থান করেন। এরপর প্রধান ফটকে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী মানুষদের জন্য দোয়া করেন।