খুলনা-ঢাকা রুটে মঙ্গলবার সকাল থেকে চালু হচ্ছে নতুন ট্রেন ‘জাহানাবাদ এক্সপ্রেস’। পদ্মা সেতু হয়ে নতুন এই রুটে সময় লাগবে মাত্র পৌনে ৪ ঘণ্টা। রেলওয়ের এই উদ্যোগে খুশি খুলনার মানুষ। কারণ খুলনা থেকে অন্য ৩টি ট্রেনে থাকায় যেতে সময় লাগে ৭ থেকে ১০ ঘণ্টা। তবে শীতকালে নতুন এই ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তনের দাবি জানিয়েছেন কেউ কেউ।
খুলনা রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে জাহানাবাদ এক্সপ্রেস ট্রেন। ট্রেনটি ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে। এটি আবার রাত ৮টায় ঢাকা থেকে ছেড়ে রাত ১১টা ৪০ মিনিটে খুলনায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সোমবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন ট্রেনটি চলাচল করবে। ট্রেনটি যাওয়া-আসার পথে যশোরের নওয়াপাড়া, সিঙ্গিয়া জংশন, নড়াইল, লোহাগড়া, কাশিয়ানী জংশন ও ভাঙ্গা জংশন স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে।
খুলনা রেলওয়ের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন মাস্টার আশিক আহমেদ জানান, ট্রেনটিতে মোট ১২টি বগি রয়েছে। এর মধ্যে ১১টি যাত্রীবাহী ও ১টি পণ্যবাহী। ১১টি বগিতে আসন সংখ্যা ৭৬৮টি। এই রুটের দূরত্ব ৩৭৮ কিলোমিটার।
খুলনা-ঢাকা রুটে শোভন চেয়ার শ্রেণির ভাড়া ভ্যাট ছাড়া ৪৪৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণির ভাড়া ৭৪০ টাকা, এসি সিটের ভাড়া ৮৮৫ টাকা এবং এসি বার্থের ভাড়া ১ হাজার ৩৩০ টাকা।
তিনি জানান, রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে খুলনায় এসে পৌঁছেছেন। তারা এই ট্রেনে করে ঢাকায় যাবেন। ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশনে সকাল ১০টায় এই ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, খুলনা-ঢাকা রুটের সুন্দরবন এক্সপ্রেস, চিত্রা এক্সপ্রেস ও নকশিকাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেন আগের নিয়মেই চলাচল করবে। শুধু নকশীকাঁথা ট্রেন খুলনা থেকে রাত সাড়ে ১১টার পরিবর্তে রাত ১১টায় ছেড়ে যাবে।
খুলনা রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, মঙ্গলবার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে ১৪টি বগি নিয়ে ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ ট্রেন খুলনা থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। পোড়াদহ, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৮ ঘণ্টা।
চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন রোববার ছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ৯টায় ১৪টি বগি নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। যমুনা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে ১০ ঘণ্টা।
নকশীকাঁথা ট্রেনটি ৫টি বগি নিয়ে প্রতিদিন রাত সাড়ে ১১টায় খুলনা থেকে ছেড়ে যায়। পোড়াদহ, ফরিদপুর, রাজবাড়ি, ভাঙ্গা হয়ে পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৭/৮ ঘণ্টা। এখন থেকে সাড়ে ১১টার পরিবর্তে রাত ১১টায় ছেড়ে যাবে।
নতুন ট্রেনটির সময়সূচি প্রসঙ্গে খুলনা নাগরিক সমাজের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মো. বাবুল হাওলাদার বলেন, ট্রেনটির জন্য শীত ও গ্রীষ্মকালীন আলাদা সময়সূচি করা প্রয়োজন। কারণ এখন শীতকালে ভোর ৬টায় অন্ধকার থাকে। ট্রেনে যেতে অনেক লোককে বাড়ি থেকে ভোর ৫টা বা সোয়া ৫টায় বের হতে হবে। সেক্ষেত্রে রিকশা-ইজিবাইক পাওয়া নাও যেতে পারে। এছাড়া ছিনতাইকারীর কবলে পড়ারও আশঙ্কা রয়েছে। সে কারণে শীতকালে ট্রেন ছাড়ার সময় সকাল ৭টায় করলে ভালো হয়।