ছাত্রদের জোরালো আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (এনইউবিটি) অধ্যাপক এটিএম জহির উদ্দীন। সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন এনইউবিটি খুলনায়। যে পদটি ইউজিসি কতৃক অনুমোদিত নয়।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুর ৩টায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও ক্রমাগত চাপের মুখে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করতে বাধ্য হন তিনি।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্ণকালীন অধ্যাপক হয়েও খুলনার বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়ন্ত্রণ হাতে রেখে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সূত্র মারফত জানা যায়, খুলনার নর্দান ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (এনইউবিটিকে) এ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন কর্তৃক মনোনীত ভিসি, প্রোভিসি বা ট্রেজারার নেই। কিন্তু অধ্যাপক ড. এটিএম জহির উদ্দীন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ডিসিপ্লিনের পূর্ণকালীন অধ্যাপক হয়েও চুক্তিভিত্তিকভাবে বেসরকারি এই বিশ্ববিদ্যালয়টির ‘সেন্টার অব এক্সিলেন্স’ পদে মোটা অঙ্কের বেতন নিচ্ছিলেন, যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন আইনের পরিপন্থি।
জানা যায়, মাত্র ৩০ হাজার টাকা সম্মানির চুক্তি করা হলেও তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাসিক দেড় লাখ টাকার উপরে বেতন নেন। বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আইবিএর অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহর ঘনিষ্ঠজন হিসেবে অধ্যাপক জহির দীর্ঘদিন ধরে জিম্মি করে রেখেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টি। জুলাই-আগস্ট এ ছাত্রজনতার আন্দোলন চলাকালীন নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের একটি অংশ ছাত্রদের পক্ষে মানববন্ধন করলে জহির উদ্দিন তার বিরোধিতা করে আন্দোলনের বিপক্ষে অবস্থান নেয়। এর পর থেকেই তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা তার পদত্যাগের দাবি তোলে। বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রাস্টি ও সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ মো. আব্দুল্লাহর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় পদ আঁকড়ে বসেছিলেন তিনি। তবে বুধবার আন্দোলনের মুখে ভাইস চ্যান্সেলরের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি।
নর্দান বিশ্ববিদ্যালয় অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি -এর সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের শিক্ষার্থী রাসেল কবির জানান, স্যারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছিল। তার ধারাবাহিকতায় ছাত্রদের দাবির মুখ তিনি পদত্যাগ করেছেন।
অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ আব্দুল্লাহর সঙ্গে কথা বলতে তার অফিসে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।