বিভিন্ন ধরনের দুর্ঘটনায় অনেক সময় মানুষের শরীরের বিভিন্ন অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অথবা অনেক সময় সংক্রমণ থেকেও বাঁচাতেও শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন করা হয় কোনও কোনও অঙ্গ। তবে এবার এই বিষয়ে গবেষণায় এল যুগান্তকারী সাফল্য। কোনও কারণে শরীর থেকে যদি কোনও অঙ্গ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলে আর চিন্তার কারণ নেই। কারণ বিজ্ঞানের সৌজন্যে এবার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই নতুন করে তৈরি হবে বিচ্ছিন্ন অঙ্গ।
সম্প্রতি আমেরিকার কয়েকজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
ওই বিজ্ঞানীদের দাবি, তারা ইতোমধ্যেই তৈরি করেছেন এক বিশেষ মলম, যা মানুষের শরীরের বাদ যাওয়া অংশের কাছে লাগিয়ে দিলেই নতুন করে গঠিত হবে বিচ্ছিন্ন অঙ্গ। মাত্র কয়েকদিন আগেই সায়েন্স অ্যাডভান্স পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে এই গবেষণাপত্রটি।
বিজ্ঞানীরা দাবি করেছেন, ইতোমধ্যেই এই পরীক্ষাটি তারা একটি আফ্রিকান স্ত্রী ব্যাঙের ওপর করেছেন এবং সাফল্যও পেয়েছেন। তারা প্রথমে ওই ব্যাঙটির পা কেটে বাদ দেন এবং ওই কাটা অংশে তাদের তৈরি মলমের প্রলেপ লাগিয়ে দেন। এই প্রলেপটি লাগানোর পর সেখানে একটি ক্যাপ জড়িয়ে দেন বিজ্ঞানীরা।
এর পর তারা লক্ষ করেন ওই ব্যাঙটির ক্ষত সম্পূর্ণ রূপে সেরে উঠেছে এবং কাটা পায়ের অংশ থেকে ফের নতুন করে পা গজাতে শুরু করেছে। শুধুমাত্র নতুন করে পা তৈরি হওয়াই নয়, তারা আরও লক্ষ করেছেন, মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই কাজ শুরু করেছে এই বিশেষ মলম।
প্রায় পাঁচ ধরনের ওষুধ মিশিয়ে এই মলম তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন একাধিক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।
জানা গেছে, নতুন করে মানুষের অঙ্গ উৎপত্তির এই বিশেষ ধারণা তারা পেয়েছেন টিকটিকির থেকে। কারণ টিকটিকির লেজ মাঝে মধ্যেই কেটে পড়ে যায়। ফের ওই টিকটিকির শরীরে নতুন করে লেজ কীভাবে তৈরি হয়, এই কৌতূহল থেকেই এই গবেষণাটি চালিয়েছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সায়েন্স অ্যাডভান্সেস জার্নালে এমনই আশার বাণী শুনিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এই মলমটি মানুষের শরীরেও বিশেষভাবে কার্যকর হবে বলে জানান তারা।
জানা গেছে, আমেরিকার ইউএফটিএস (UFTS) এবং হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন গবেষক গবেষণাটি করছেন। কীভাবে মানুষের শরীরের কাটা অঙ্গগুলোকে ফিরিয়ে আনা যায় সে ভাবনা থেকেই বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা করেন। সাফল্য পেয়ে গেছেন বলে দাবি করেছেন তারা। বিজ্ঞানীরা এই চিকিৎসা পদ্ধতিটির নাম রেখেছেন ‘লিম্ব টু গ্রো’ অর্থাৎ কাটা অংশের বৃদ্ধি। সূত্র: দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, এনবিসি নিউজ, সিনেট, সায়েন্স অ্যাডভান্সেস
পিএসএন/এমআই