এক বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ দিনের মুখ দেখেছে ক্রিপ্টোমুদ্রার বাজার। এতে ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রায় অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলার কমে গেছে বিভিন্ন মুদ্রার মোট দাম।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের উপর নতুন শুল্ক আরোপের ঘোষণা করার পরই ক্রিপ্টো বাজারের এই ধস শুরু হয়, যা গোটা বিশ্বে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেনডেন্ট।
শুল্ক আরোপের কারণে ইউরোপ, এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে এর প্রভাব পড়লেও ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়ায় কিছু নির্দিষ্ট ক্রিপ্টোমুদ্রা বিশেষভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছে।
ক্রিপ্টো ট্রেডিং কেবল প্রচলিত ট্রেডিং সময়ের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় অর্থাৎ সোমবার এই বাজার খোলার আগে ঝুঁকিপূর্ণ বিভিন্ন সম্পদ ছেড়ে দিতে পেরেছেন বিনিয়োগকারীরা।
এ সপ্তাহ শেষে ‘ইথেরিয়াম’ ও ‘রিপল’ নামের ক্রিপ্টোমুদ্রা প্লাটফর্ম উভয়েরই দাম প্রায় এক তৃতীয়াংশ কমেছে, যেখানে ‘সোলানা’ ক্রিপ্টোমুদ্রার দাম কমেছে প্রায় এক চতুর্থাংশ।
বিটকয়েয়ের মূল্য এক লাখ ডলারের নিচে নেমে গেলেও নিজের দাম ভালোভাবেই টিকিয়ে রাখতে পেরেছে ক্রিপ্টোমুদ্রাটি। এর ফলে বিটকয়েনকে ‘ডিজিটাল সোনা’র মতো নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে এর দাবিকে আরও জোরদার করেছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ইন্ডিপেনডেন্ট।
তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে তথাকথিত বিভিন্ন মিম কয়েন, যার মধ্যে রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সম্প্রতি চালু হওয়া ট্রাম্প কয়েন, যার দাম শীর্ষ থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে।
কয়েনমার্কেটক্যাপ-এর ‘ক্রিপ্টো ফেয়ার অ্যান্ড গ্রিড ইনডেক্স’-এর সঙ্গে এই বছর প্রথমবারের মতো গুটিয়ে ফেলা ব্যবসার মোট পরিমাণ দুইশ কোটি ডলারের উপরে পৌঁছেছে।
ক্রিপ্টো প্ল্যাটফর্ম ‘মার্কারো’র সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও পেট্র কোজিয়াকভ বলেছেন, “শুক্রবার ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পরে ক্রিপ্টোমুদ্রার বাজারে ভয়, অনিশ্চয়তা ও সন্দেহের এক ঢল বয়ে গেছে।”
“এটি আবারও বিভিন্ন মিম টোকেনের অনুমানমূলক প্রকৃতি ও ক্রিপ্টোমুদা সম্পর্কে অজ্ঞ ব্যক্তিদের জন্য এগুলো যে উচ্চ ঝুঁকি তৈরি করে সে বিষয়টিই তুলে ধরেছে।”
এর আগে ট্রাম্পই প্রথম ‘ক্রিপ্টো প্রেসিডেন্ট’ হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সম্প্রতি এক নির্বাহী আদেশে সই করেছেন তিনি, যা ক্রিপ্টো শিল্পের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে, অনেকেই বিটকয়েনের সাম্প্রতিক মূল্য বেড়ে যাওয়ার জন্য ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসে আগমনকে দায়ী করেছেন। তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেওয়ার দিনই বিটকয়েনের দাম সর্বকালের সর্বোচ্চ এক লাখ দশ হাজার ডলারের কাছাকাছি পৌঁছে যায়।
ট্রাম্পের সবচেয়ে প্রত্যাশিত নীতিগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে বিটকয়েনের রিজার্ভ তৈরি করা।