খুশদিল শাহর বলটা হঠাৎ নিচু হয়ে গেল, বিরাট কোহলি সুইপ করতে চাইলেন, বলটা তার প্যাডে লাগতেই জোরালো আবেদন উঠল। আম্পায়ার নাকচ করলেও রিভিউটা নিয়ে নিলেন পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। কয়েক ওভারের এদিক ওদিকে শ্রেয়াস আইয়ার আর হার্দিক পান্ডিয়া বিদায় নিয়েছিলেন। কোহলিও যদি সে রিভিউতে সাজঘরের পথ ধরে ফেলতেন, ম্যাচে যে কোনো কিছুই হতে পারত।
শেষমেশ অমন কিছুই হয়নি। ম্যাচের যা উত্তেজনা ওই রিভিউ নাকচ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উবে গেছে। কোহলি তার ক্যারিয়ারের ৮২তম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরিটা তুলে নিলেন, সঙ্গে সঙ্গে ভারত তুলে নিয়েছে তাদের টানা দ্বিতীয় জয়, ৪৫ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখে জিতে সবার আগে পৌঁছে গেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে।
ভারতের ইনিংসের শুরুতে কিছুটা চাপে থাকলেও শুবমান গিলের ব্যাটিং দলকে এগিয়ে নেয়। রোহিত শর্মার দ্রুত বিদায়ের পর দায়িত্বশীল ব্যাটিং করেন গিল ও কোহলি। গিলের ৪৬ রানের ইনিংস থামে স্পিনার আবরার আহমেদের বলে। তবে এরপর কোহলি ও শ্রেয়াস আইয়ারের জুটি ভারতকে জয়ের পথে নিয়ে যায়। আইয়ার ৫৬ রান করে আউট হলেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ শেষ করে ফেরেন কোহলি, ১০২ রানে অপরাজিত থেকে।
কোহলির ইনিংসটি ছিল বেশ হিসেবি। ফিফটি ছোঁয়ার পর তিনি আরো ধীরস্থির হয়ে খেলেন, লক্ষ্য রাখেন নিজের সেঞ্চুরির দিকেও। ৪৩তম ওভারে চারের মাধ্যমে তিনি শতকের দেখা পান, একইসঙ্গে নিশ্চিত হয় ভারতের জয়। এটি ওয়ানডেতে কোহলির ৭৭তম সেঞ্চুরি।
এর আগে পাকিস্তানের ইনিংসে রানের গতি ছিল বেশ মন্থর। টস জিতে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তান শুরু থেকেই ভারতীয় বোলারদের বিপক্ষে ধুঁকেছে। মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌদ শাকিল কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন, কিন্তু তাদের ধীরগতির ব্যাটিং পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যেতে পারেনি। শেষ দিকে কুলদীপ যাদবের বোলিংয়ে ধসে পড়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ, ৪৯.৪ ওভারে ২৪১ রানেই অলআউট হয় তারা।
ভারতের হয়ে বল হাতে উজ্জ্বল ছিলেন কুলদীপ যাদব, যিনি ৪ উইকেট নিয়ে পাকিস্তানের ব্যাটিং লাইনআপ গুঁড়িয়ে দেন। হার্দিক পান্ডিয়া ও অক্ষর প্যাটেলও গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে উইকেট তুলে নেন।
এ ম্যাচে কোহলির ব্যাটিং ছাড়াও আরও একটি রেকর্ডের সাক্ষী হয়েছে ক্রিকেটবিশ্ব। ওয়ানডে ক্রিকেটে দ্রুততম ১৪ হাজার রান পূর্ণ করেছেন কোহলি, মাত্র ২৮৭ ইনিংসে এই মাইলফলকে পৌঁছেছেন তিনি। পাশাপাশি ওয়ানডেতে ভারতীয় ফিল্ডার হিসেবে সর্বোচ্চ ১৫৭ ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ডও গড়েছেন তিনি।ভারতের এই জয় কেবল তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর বিপক্ষে আরেকটি জয় নয়, বরং বিশ্বকাপে তাদের আত্মবিশ্বাস আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। দলটাকে পাইয়ে নিয়ে গেছে সেমিফাইনালের দোরগোড়ায়।