করোনা মহামারিকালে কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পশারহাটে মানুষের গতানুগতিক চাপ কমাতে ‘ডিজিটাল হাট’-এর উদ্বোধন করেছেন স্থানীয় সরকারমন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
রোববার (৪ জুলাই) অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এবং ই-ক্যাব্যের উদ্যোগে এই ডিজিটাল হাটের (www.digitalhaat.net) এর উদ্বোধন করা হয়।স্থানীয় সরকারমন্ত্রী এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে প্রায় সাড়ে তিনশ কেজি ওজনের একটি গরু ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকায় কিনে ডিজিটাল হাটের উদ্বোধন করেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে সংযুক্ত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ডিজিটাল হাটে লাইভের মাধ্যমে দরাদরি করা যাবে। এখানকার বিক্রেতারা ভেরিফায়েড এবং গরুর ওজন ডিজিটাল স্কেলে মাপা। এবছর এখান থেকে এক লাখ গরু বিক্রির টার্গেট নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সারা দেশ থেকে একশ ই-কমার্স প্লেস অংশ নিয়েছে। এক হাজারের বেশি উদ্যোক্তা বা খামারি যুক্ত হয়েছেন। এক সপ্তাহের মধ্যেই গরু গ্রাহকের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে। ক্রেতারা প্রতারিত হলে ভোক্তা অধিকারের কাছে অভিযোগ করতে পারবেন।
উত্তর সিটি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, অনলাইন থেকে যারা গরু কিনবেন তাদের কোনো হাসিল দিতে হবে না। গরুর হাট থেকে লাইভ করেও অনলাইনে গরু কেনা যাবে। ক্রেতাদের সব রকমের নিরাপত্তা দেওয়া হবে। করোনাকালে আমরা সবাই ঘরে থাকবো, নিরাপদ থাকি।
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, এবার স্টোর পদ্ধতি চালু হয়েছে। গ্রাহক যখন গরু পেয়ে যাবেন তখন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা রিলিজ হবে। অনলাইনের মাধ্যমে গরু কিনতে পারবেন, বুকিং করে দিলে জবাই দিয়ে বাসায় মাংস পৌঁছে দেওয়া হবে। আমাদের কাছে ২৫টি ফ্রিজার ভ্যান আছে। আমরা ফ্রিজার ভ্যানের মাধ্যমে মাংস পাঠিয়ে দেবো। এছাড়াও মানবসেবা প্ল্যাটফর্মে চামড়া বিক্রি করে মানুষের মধ্যে বিলি করে দেওয়া হবে।
তিনি আরও বলেন, গতবার ডিজিটাল হাটে তিন সপ্তাহে ২৭ হাজার বিক্রি করতে পেরেছি। এবার এক লাখ বিক্রির টার্গেট নেওয়া হয়েছে। এক লাখ বিক্রি করতে পারলে ন্যূনতম ৫ লাখ লোক গরুর হাটে যাবে না।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে আমাদের সব স্থবির হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আমরা সচল আছি। অতিমারী খুব বেশি সমস্যা করতে পারেনি। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্যোগের কারণে। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে হলে জনসমাগম এড়াতে হবে।
টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশকে দৃশ্যমান করার জন্য ই-নথি, ডিজিটাল কমার্সসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে সারা পৃথিবীর কাছে অতুলনীয় একটা বিষয়। করোনার চাপের সময়টায় ৯৮ শতাংশ ভূ-খণ্ড ডিজিটাল কানেকটিভিটির মধ্যে আছে। এই ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম নিঃসন্দেহে করোনা মহামারিকালে মানুষের জন্য সহায়ক হবে।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, মহামারির মধ্যে কোরবানির হাট নিয়ে আমরা উদ্বেগের মধ্যে আছি। করোনা থেকে সুরক্ষা পাওয়ার জন্য অনলাইন হাট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
অনলাইন হাটে যাতে বেশি সংখ্যক মানুষ সংযুক্ত হয় সে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।
আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনলাইন হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার জন্য একটি কল সেন্টার করার পরামর্শ দেন।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সারের সঞ্চালনায় আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম, এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন, ডেইরি মালিক সমিতির সভাপতি সালাউদ্দিন আহমেদ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মের কর্মকর্তারা সংযুক্ত ছিলেন।