রোদের উজ্জ্বল তেজ। আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ঘরে। তার উপর বাতাসের আদ্রতা অনেকটাই বেশী। এতে করে শরীরে গরমের অনুভূতি প্রচণ্ড রকমের। বাইরে কিংবা ঘরে থাকলেও শরীর থেকে ঘাম শুকাচ্ছে না। এর মধ্যেই চলছে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের জনসংযোগ। পাঁচ জন মেয়র প্রার্থী দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ৩১টি ওয়ার্ড জুড়ে। আর ১৭৫ জন কাউন্সিলর প্রার্থী বারংবার যাচ্ছেন ভোটারদের কাছে। এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী শফিকুর রহমান মুশফিক মাদক মুক্ত নগরী গঠন ও হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি না করে নাগরিক সেবার মান বাড়াতে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন।
আওয়ামী লীগ: আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক আধুনিক ও পরিচ্ছন্ন খুলনা গড়তে পূনরায় নগরবাসীর সমর্থন চেয়ে বলেন, নতুন কোন হোল্ডিং ট্যাক্স না বাড়িয়ে নাগরিক সেবার মান উন্নত করা হবে। নতুন প্রজন্মের বাসযোগ্য একটি আধুনিক মহানগরী গড়তে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করা হবে। তিনি আরো বলেন, ভোট প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। ভোট একটি পবিত্র আমানত। গণতন্ত্রের ধারা অব্যাহত রাখতে প্রত্যেক নাগরিককে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে নিজ পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার আহবান জানান মেয়র প্রার্থী। তিনি বুধবার সকালে নগরীর হাদিস পার্কে প্রাতঃ ভ্রমণকারী ক্লাবগুলোর সাথে মতবিনিময় এবং ২৮ ও ২৯নং ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে গণসংযোগ ও সুধীজনদের সাথে মতবিনিময়কালে একথা বলেন। এসময় মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল রানা, আওয়ামী লীগ নেতা নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধ মকবুল হোসেন মিন্টু, ফকির সাইফুল ইসলাম, আবুল কালম আজাদ, জামাল উদ্দিন বাচ্চু, বাদল সরকার, আজমসহ দলের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি মহিরবাড়ী খালপাড়, ফরিদ মোল্লা মোড় টুটপাড়া, ট্যাংব রোড, হাজী মহসিন রোড, রূপসা সহ বিভিন্ন এলাকায় গণ সংযোগ করেন। এসময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, চলমান উন্নয়ন কাজের ধারাবাহিকতা রক্ষা ও স্মার্ট নগরী গড়তে ভোটাররা আবার আমাকে থোট দেবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থী অপরদিকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে নাগরিক পরামর্শক কমিটি গঠন, তিন মাস পর পর মুখোমুখি অনুষ্ঠান, হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি না করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ইশতেহার দিলেন খুলনা সিটি নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক। বুধবার দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ইশতেহার ঘোষণা করেন। মেয়র প্রার্থী মাদক মুক্ত নগরী গঠন, আধুনিক আর্ট গ্যালারি স্থাপন, রিকশা, ইজিবাইক, ক্ষুদ্র যানবাহানের লাইসেন্স সহজতর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, কেসিসির সীমনা বৃদ্ধি, সুইমিংপুল নির্মাণ, নতুন নতুন মার্কেট নির্মাণ, প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড বিকেন্দ্রীকরণ করা হবে। মুশফিক ট্যাক্স হোল্ডারদের স্মার্টকার্ড প্রদান, শ্রমিক-কর্মচারীদের ৯০ মাসের গ্রাচ্যুইট ফাল্ড গঠন, এসডিজি নীতিমালা অনুসরণ ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর সাথে সর্ম্পক স্থাপন করা হবে। সিটি করপোরেশনের প্লানিং শাখায় দক্ষ জনবল নিয়োগ, নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীবান্ধব নগরী গঠন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এসময় স্বতন্ত্র প্রার্থী নির্বাচনী পরিবেশে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সাধারণ মানুষ এখনও নির্বাচন নিয়ে সংশয়ে আছেন। তবে পরিবেশ ভাল। আমি চাই মানুষ ভোট কেন্দ্রে আসুক। তাদের যাকে পছন্দ, তাকে ভোট প্রদান করুক। দয়া করে রাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়া ও এর স্বপ্নকে ব্যর্থতায় পরিগণিত হতে দেবেন না।
জাতীয় পার্টি: জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্শী শফিকুল ইসলাম মধ বলেছেন, ইশতহোররে নামে বড় র্ফদ দিয়ে লাভ কি কথায় কাজে মিল থাকতে হবে। বুধবার সকাল ১০টায় খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা মোড়, ডালমীল মোড়, পৈপাড়া, বানরগাতী বাজারসহ ১৯, ২৫ ও ২৬নং ওর্য়াডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী সম্পর্কে এসব খতা বলেন। তিনি বলনে, খুলনা সিটিতে বসবাসরত সাধারণ নাগরিকদের সেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। নির্বাচনের সময় বড় একটি র্ফদ ধরিে দেয় ইশতেহারের নামে। ইশতেহাে লেখা থাকে ৪০-৫০টা কাজের অথচ নির্বাচনের পরে দুটো কা শেষে হয় না। তিনি তো বেশ কয়েকেবার নির্বাচন করে মেয়র হয়েছেন তিনি কি এমন ইশতেহার দেওয়া কাজ করেছনে? আমি আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) ইশতহার দিব। আমার ইশতহোরে প্রথমত লেখা থাকবে মিষ্টি পাণি, মশক নিধন ও জলাবদ্ধতা দূরীকরণ। আমার ইশতেহারে যে কাজের কথা উল্লেখ করা হবে আপনাদের একটি ভোটরে মাধ্যমে আমি যদি মেয়র নির্বাচিত হই তাহলে সে কাজগুলি অবশ্যই অবশ্যই আমি সম্পন্ন করব। এসময় উপস্থতি ছিলেন, কেন্দ্রীয় ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা আল জুবায়ের, নগর জাতীয় পার্টির সভাপতি অ্যাডভোকেট মহানন্দ সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জেলার সাধারণ সম্পাদক এম হাদিউজ্জামানসহ শেখ মোঃ নাজমুল কবির সাদী, গাউছুল আজম, আশফাকুল ইসলাম সেলিম, তৌমুর হোসেন শাহিন, প্রিন্স হোসেন কালু, মোস্তফা কামাল রিপন, কালা চান, নেয়ামত খান, অপূর্ব দত্ত নেকু, মাসুদ হাসান, খান, কামরুজ্জামান রজব, প্রমুখ।
ইসলামী আন্দোলন: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনী তহাতপাখার মেয়র প্রার্থী হাফেজ মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা আজ মারাত্বক হুমকির মুখে। এ চরম দুরাবস্থার কারণ এবং তার সমাধান আমাদের উদঘাটন করতে হবে। হাজার হাজার কোটি টাকা বাজেট হওয়া সত্ত্বেও সিটি কর্পোরেশনে কাঙ্খিত মানের জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা হলো না কেন? কাম্যমানের নাগরিক সুবিধা কেন নিশ্চিত হলো না এ জিজ্ঞাসা সকল নাগরিকের। বারংবার মুখোরোচক শ্লোগানের ধোকায় আমরা আর কতবার নিপতিত হবো। এ থেকে আমাদের সরে আসতে হবে। আমি খুলনা সিটি করপোরেশনে নির্বাচিত হলে এলাকা ভিত্তিক জননিরাপত্তা নিশ্চিত করণে কাজ করবো। বুধবার সকালে নগরীর ২১ ও ২৩ এবং বিকালে ১৪ ও ১৬নং ওয়ার্ডের নগর ভবন, কেসিসি মার্কেট, পোস্ট অফিস,পিকচার প্যালেস, নিক্সন মার্কেট, বয়রা বাজার, রেজিস্ট্রি অফিসসহ বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ ও পথসভায় তিনি এ কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, সহকারি মহাসচিব মাওলানা ইমতিয়াজ আলম দফতর সম্পাদক লোকমান হোসেন জাফরী, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশ এর সভাপতিআলহাজ্ব আবু তাহের, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের সাংগঠনিক স¤পাদক মুহা. সিরাজুল ইসলাম।
জাকের পার্টি: জাকের পার্টির গোলাপ ফুল প্রতীকের প্রার্থী এস এম সাব্বির হোসেন সকল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। এসময় তিনি খুলনা সিটিকে নতুন ভাবে সাজানোর কথা বলে ভোট চার ভোটরদের কাছে। তিনি বলেন, আমি নির্বাচিত হলে খুলনা হবে বাংলাদেশের সেরা দৃষ্টিনন্দন ও উন্নত নগরী।