জিলহজ মাসের চাঁদ দেখা থেকে শুরু করে কোরবানির পশু জবাই করা পর্যন্ত হাঁস-মুরগি জবাই করা নিয়ে দেশের কোথাও কোথাও বিভিন্ন ধরনের মতবাদ রয়েছে। কোরবানির নিয়ত করা ব্যক্তির জন্য মাংশ খাওয়া এবং ওই বাড়িতে পশু জবাই নিষেধ এমন অনেক কুসংস্কার আমাদের সমাজে বিদ্যমান রয়েছে।
ইসলামে এধরনের কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না জানতে চান অনেকে। উত্তর হচ্ছে— এ বিষয়ে কোরআন সুন্নাহর কোথাও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি। তবে, যে ব্যক্তি কোরবানি করার ইচ্ছে করে তার জন্য পশু জবাই হওয়া পর্যন্ত নখ, চুল, শরীরের অতিরিক্ত পশম, চামড়া ইত্যাদি কাটা থেকে বিরত থাকা জরুরি। কেননা এসব ব্যাপারে একাধিক হাদিসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
‘সুতরাং তোমরা তার আয়াতসমূহে ঈমানদার হলে, যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে তা থেকে খাও’ (সুরা আনআম: ১১৮)। অন্য আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর তোমাদের কী হয়েছে যে, যাতে আল্লাহর নাম নেওয়া হয়েছে তোমরা তা থেকে খাবে না? যা তোমাদের জন্য তিনি হারাম করেছেন, তা তিনি বিশদভাবেই তোমাদের কাছে বিবৃত করেছেন…(সুরা আনআম: ১১৯)
অতএব, মেহমানদের উদ্দেশ্যে বা নিজের প্রয়োজনে এই সময়ে গরু, ছাগল, হাঁস মুরগি, ইত্যাদি হালাল প্রাণী আল্লাহর নামে জবাই করা, আমিষ জাতীয় খাবার খাওয়া, আতর-সুগন্ধি ব্যবহার করা সবকিছুই জায়েজ।
যারা বলে কোরবানির দিন হাঁস-মুরগি ইত্যাদি দুই পাবিশিষ্ট প্রাণী জবাই করা যাবে না—এটি একটি অমূলক ধারণা, এর কোনো ভিত্তি নেই। একইভাবে এ সময়ে নতুন জামা কাপড় পরিধান করা ও স্ত্রী সহবাসেও কোনো অসুবিধা নেই। তবে কোরবানির দিনগুলোতে কোরবানির নিয়তে হাঁস-মুরগি জবাই করা জায়েজ নেই। (আল-বাহরুর রায়েক: ৮/৩২৪, হিন্দিয়া: ৫/৩০০, খুলাসাতুল ফতোয়া: ৩/৩১৪)
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কোরবানিসংক্রান্ত মাসালাসহ দীনের সকল মাসায়েল জানার, বুঝার এবং সহিহ সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
এসআই