খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সাময়িকভাবে বহিষ্কৃত ৩৭ শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ অবশেষে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একইসাথে খুলে দেওয়া হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব আবাসিক হল। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে অনুষ্ঠিত ১০২তম সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, পূর্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হল খোলার তারিখ ছিল ২ মে, তবে নতুন সিদ্ধান্তে সেগুলো আজ বিকেলেই খুলে দেওয়া হয়। একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ৪ মে থেকে।
গত ১৩ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা হল খুলে দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরে ১৫ এপ্রিল শিক্ষার্থীরা ছয়টি ছাত্র হলের তালা ভেঙে হলে প্রবেশ করেন। পরবর্তীতে ছাত্রীদের হলেও একইভাবে প্রবেশ করা হয়। বর্তমানে সব আবাসিক হলে শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছেন।
উল্লেখ্য, ১৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। একইসাথে এ ঘটনার তদন্তে বিষয়টি ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির কাছে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন কর্মসূচিতে যায়। বুধবার সকালে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার কুয়েট ক্যাম্পাসে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানান। যদিও শিক্ষার্থীরা উপাচার্য অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
এদিন ইউজিসি থেকে একটি তদন্ত দল কুয়েট এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে। অন্যদিকে কুয়েট শিক্ষক সমিতির নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যদি চাপ প্রয়োগ করে উপাচার্যকে অপসারণ করা হয়, তবে তারা তা মেনে নেবেন না এবং প্রয়োজনে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখবেন।
১৮ ফেব্রুয়ারির সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হওয়ার পর প্রশাসন ক্যাম্পাসে তালা লাগিয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এবং ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
সাম্প্রতিক সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্তে আন্দোলনে কিছুটা অগ্রগতি দেখা গেলেও শিক্ষার্থীরা তাদের মূল দাবি—উপাচার্যের অপসারণ—অবিচলভাবে ধরে রেখেছেন।