ইউক্রেনে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন না হওয়া পর্যন্ত সামরিক অভিযান চলবে বলে জানিয়েছে রুশ কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী এমন তথ্য জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু জানিয়েছেন, ‘প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কর্তৃক নির্ধারিত কাজগুলো সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
মস্কোতে রুশ সেনাবাহিনীর সামরিক প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে শোয়েগু বলেন, ‘এখন রাশিয়া দেশটির সেনা সদস্যদের জীবন ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণের ওপর বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। এছাড়া বেসামরিক নাগরিকদের যেকোনো হুমকি থেকে মুক্ত রাখার বিষয়েও জোর দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘লুহানস্ক গণপ্রজাতন্ত্রের ভূখণ্ড সম্পূর্ণরূপে মুক্ত করার পরেও রুশ সেনাবাহিনী থামবে না। দেশটির সামরিক বিভাগের সর্বোচ্চ কমান্ডারের দ্বারা নির্ধারিত কাজগুলো সম্পূর্ণরূপে সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে।’
ইউক্রেনে পশ্চিমাদের অস্ত্র সরবরাহ অব্যাহত রাখার বিষয়ে শোয়গু বলেন, সংঘাতকে দীর্ঘায়িত করার জন্যই তারা এসব করছে।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘২৪ ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে দেশটিতে ২৮ টনেরও বেশি সামরিক সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। সরবরাহকৃত এসব অস্ত্রের কিছু অংশ কালোবাজারে চলে গেছে এবং পুনরায় মধ্যপ্রাচ্যে বিক্রি করা হয়েছে।’
শোইগু বলেন, বর্তমানে ইউক্রেনে বিদেশী ভাড়াটে সেনাদের সংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে। তাদের মধ্যে অনেকেই যুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছে এবং অন্যরা এ দেশটি থেকে পালিয়ে গেছে। গত ১০ দিনে ১৭০ বিদেশী ভাড়াটে সেনা নিহত হয়েছে। এছাড়া আরও ৯০ সেনা যুদ্ধ ত্যাগ করে ইউক্রেন থেকে পালিয়েছে।
তিনি বলেন, রুশ সেনারা সামরিক অভিযান পরিচালনার পাশাপাশি মানবিক কার্যক্রমেও অংশ নিয়েছে। তারা ইউক্রেন থেকে স্বাধীন করা শহরগুলোর বেসামরিক নাগরিকদের সহায়তা প্রদান করেছে। রুশ সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে শান্তিপূর্ণ জীবন নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগরে নৌ-চলাচলের নিরাপত্তা বজায় রাখা হয়েছে।
রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা কৃষ্ণ সাগর ও আজভ সাগরে বেসামরিক জাহাজ চলাচলের জন্য দু’টি মানবিক করিডোর তৈরি করেছি। মারিউপোল (ইউক্রেনের) বন্দর সংলগ্ন সমুদ্রতীর থেকে মাইন দূর করা হয়েছে। এছাড়া মাইন পরিষ্কার করার জন্য ইউক্রেনের লুহানস্ক ও দোনেৎস্ক অঞ্চলে বড় আকারের কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৩,৭০০ হেক্টরের বেশি জমি থেকে মাইন পরিষ্কার করা হয়েছে। এখানে ৪৬ হাজার তিন শ’র বেশি বিস্ফোরক ডিভাইস পাওয়া গেছে এবং এগুলোকে নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
পি এস/এন আই