ভারতের আলেম মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরের বিশ্ব ইজতেমায় আসতে দেওয়ার দাবিতে কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়েছেন সাদপন্থীরা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সকালে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলেও পুলিশের বাধার মুখে তারা কাকরাইল মসজিদের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। এর ফলে ওই এলাকার প্রতিটি সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
কাকরাইল মসজিদের সামনে অবস্থান করা কয়েকজন জানান, ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে মাওলানা সাদের উপস্থিতি চান তারা। মাওলানা সাদকে যেন অনুমতি দেওয়া হয় সেই দাবিতে সকালে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু পুলিশের বাধার মুখে পড়ে সড়কে অবস্থান নেন তারা। সাদপন্থীদের অবস্থান ঘিরে সতর্ক অবস্থানে আছে পুলিশ।
dhaka-1১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে বিশ্ব ইজতেমা। দেশের লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নেন। এছাড়া সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, ভারত, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকেও অনেক মুসল্লি ইজতেমায় অংশ নিতে আসেন।
আগে এক মঞ্চ থেকে একবারই বিশ্ব ইজতেমা হলেও মতভেদের কারণে ২০১৯ সাল থেকে দুই পর্বে হচ্ছে বিশ্ব ইজতেমা। একটি গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ভারতের মাওলানা সাদ অনুসারীরা। অপরটির নেতৃত্বে বাংলাদেশের আলেম ওলামাদের মাওলানা জুবায়ের অনুসারী গ্রুপ। মাঝে কোভিড মহামারীর কারণে ইজতেমা দুই বছর বন্ধ থাকে। ২০২২ সাল থেকে ফের ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বের আয়োজনে।
এবার দুই পর্বে না করে একত্রে ইজতেমা করতে চেয়েছিল সরকার। এজন্য তাবলীগ জামাতের দুই পক্ষকে নিয়ে গত ৪ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ডাকা ওই বৈঠকে একটি পক্ষের অনুসারীরা অংশ নিলেও অন্য পক্ষ যাননি।
পরদিন ৫ নভেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলন করে তাবলিগ জামাতের কওমি মাদরাসাভিত্তিক আলেমদের সংগঠন ওলামা-মাশায়েখ বাংলাদেশ। এটি মূলত তাবলিগ জামাতে জোবায়েরপন্থী অংশ। তারা মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে ঢাকায় আসতে না দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সেইসঙ্গে কাকরাইল মসজিদের নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা এককভাবে করার ঘোষণা দেন।
এমন অবস্থার মধ্যে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব এবং ৭ থেকে ৯ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের তারিখ ঘোষণা করা হয়।
প্রথম পর্বের ইজতেমায় অংশ নেবেন ‘জুবায়েরপন্থিরা’ এবং দ্বিতীয় পর্বে অংশ নেবেন ‘সাদপন্থিরা’। প্রথম পর্বের আয়োজকরা তাদের আয়োজন শেষে ঢাকার বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বে গঠিত বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতি সংক্রান্ত কমিটিকে ৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৩টার মধ্যে ইজতেমার মাঠ বুঝিয়ে দেবেন।
দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনকারীরা একইদিন বিকেলে কমিটির কাছ থেকে ইজতেমার মাঠ বুঝে নেবেন। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা শেষে ১১ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তারা কমিটির কাছে মাঠ হস্তান্তর করবেন।