করোনার ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট এখনো বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। যদিও এর উপসর্গ মৃদু বলে করোনা আক্রান্তরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন।
আবার অনেকেই ওমিক্রনের প্রভাবে গুরুতর করোনার উপসর্গে ভুগছেন। তবে লং কোভিডের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে ওমিক্রন, এমনটিই জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
সারবিশ্বের করোনা রোগীদের তথ্যাদি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, করোনা রোগীরা সুস্থ হলেও পরবর্তী সময়ে নানা সমস্যায় ভুগছেন। বিভিন্ন ধরনের কোভিড পরবর্তী শারীরিক সমস্যা উঠে আসছে।
এ বিষয়ে ভারতের মেডিকা হার্ট ও একমো টিমের অন্যতম বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. অর্পণ চক্রবর্তী জানান, করোনার প্রভাব উঠলেও কারও ফুসফুসের সমস্যা থেকে যাচ্ছে। কেউ ভুগছেন চোখের সমস্যায়। কারও আবার ডায়াবেটিস বেড়ে যাচ্ছে।
তেমনই করোনা থেকে সেরে উঠে হার্টের নানারকম সমস্যা নিয়েও ভুগছেন অনেকেই। এমনও রোগী মিলছে যারা করোনামুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরেই হার্ট অ্যাটাক করেছেন।
চিকিৎসকরা দেখেছেন, এই রোগীদের কোভিডের পরই হার্টের সমস্যা তৈরি হয়েছে। দেখা যাচ্ছে করোনা নেগেটিভ হয়ে যাওয়ার পর কয়েকটি উপসর্গ নিয়ে অনেক রোগীই চিকিৎসকার দ্বারস্থ হচ্ছেন।
কোভিড আক্রান্ত হওয়ার পর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে যেমন প্রদাহ সৃষ্টি হতে পারে, হার্টের পেশিতেও তেমন প্রদাহ হয়। যাকে বলে মায়োকার্ডিটিস।
করোনা পজিটিভ হওয়ার পর থেকে হৃৎপিণ্ডের পেশি মায়োকার্ডিয়ামে ইনফ্লামেশন দেখা যেতে পারে। যা নেগেটিভ হওয়ার পরও বাড়তে থাকে ও অ্যাটাকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
আরও যেসব লক্ষণ দেখা যাচ্ছে-
>> বুক ধড়ফড়
>> মাথা ঘুরে যাওয়া ও ঝিমঝিম করা
>> ক্লান্তি
>> সব কাজে অনীহা
>> একটু পরপরই বুক ধড়ফড় করা
>> বুকের ধুকপুকানি টের পাওয়া
>> অনেকেই গন্ধ পাচ্ছেন না
>> কারও কাশি সারছে না
>> সিঁড়িতে উঠতে-নামতে হাঁপিয়ে উঠছেন
>> হজম হচ্ছে না ঠিকভাবে
>> অবসাদ ইত্যাদি।
ডা. অর্পণ চক্রবর্তী আরও জানান, করোনামুক্তির পরও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারছেন না কেউই। হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস থেকে পরিপাকতন্ত্র, সব কিছুর উপরই করোনাভাইরাস তার আঁচড় রেখে যাচ্ছে। আর তা জানান দেয় কোভিড মুক্ত হওয়ার পরই।
করোনামুক্তির পরও ফুসফুস পুরোপুরি সুস্থ হচ্ছে না অনেকেরই। বেশি পরিশ্রম করতে গেলেই সেটা টের পাওয়া যায়। মানুষ হাঁপিয়ে ওঠেন। অক্সিজেনের পরিমাণ কমে যায়। এমন লক্ষণ দেখলেই পালমনোলজিস্টের পরামর্শ নিন।
আবার হার্টেও থেকে যাচ্ছে অসুস্থতা। মাঝে মাঝেই বুক ধড়ফড় করা, নিজের হার্ট-বিট শুনতে পাওয়া এসব সমস্যার ইঙ্গিত দেয়। এই লক্ষণগুলো দেখলেও সতর্ক হতে হবে।
এই বিশেষজ্ঞর পরামর্শ হলো, কোভিড পরবর্তী অসুস্থতা কাটিয়ে উঠতে দরকার গ্রেড অনুসারে থেরাপি। কোভিডমুক্ত হওয়ার ঠিক কতদিন পর থেকে কতটুকু পরিশ্রম করা যাবে, কতটা এক্সারসাইজ করা উচিত, সবটাই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে করতে হবে।