যেসব বিদ্যালয়ে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী আছে সেগুলোকে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করার চিন্তা রয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার।
উপদেষ্টা রেবাবার সকালে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে বিভাগীয় পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, যেসব বিদ্যালয়ে খুব কম সংখ্যক শিক্ষার্থী আছে সেগুলোকে পার্শ্ববর্তী বিদ্যালয়ের সঙ্গে একীভূত করার চিন্তা রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে আগের মতো কোটা না রাখার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সাধারণভাবে অন্য চাকরিতে যেমন ৭ শতাংশ কোটা রয়েছে, এখানেও তা থাকবে। তবে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান ও গণিতে দক্ষ করে তুলতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে মোট নিয়োগের ২০ শতাংশ গণিত ও বিজ্ঞানের বিষয়গুলো থেকে পাশ করাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। গাইড বই ও প্রাইভেট কোচিং এর বিষয়টি নিরুৎসাহিত করতে হবে।
এ দিন নতুন করে বইয়ের টেন্ডার ও সংস্কারের কারণে আগামী বছর ১ জানুয়ারি বই উৎসব হচ্ছে না বলে জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। তবে জানুয়ারি মাসের মধ্যেই প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
তিনি বলেন, একটি দেশকে বই ছাপানোর জন্য টেন্ডার দেওয়া হয়েছিল, যা বাতিল করা হয়েছে। নতুন বইয়ে বেশ কিছু সংস্কার ও সংযোজন করা হচ্ছে। ফলে নির্ধারিত সময়ে বই দিতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। নতুন বইয়ে গণঅভ্যুত্থানের নানা চিত্র তুলে ধরা হবে। এছাড়া উপবৃত্তিসহ প্রাথমিক শিক্ষার অন্যান্য সমস্যাগুলোও পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।
উপদেষ্টা বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে পর্যায়ক্রমে দেশের সকল প্রাথমিক বিদ্যালয় মিড-ডে মিল এর আওতায় আসবে। প্রথম পর্যায়ে দেশের ১৫০টি উপজেলার সব বিদ্যালয়ে এটি চালু হবে। দক্ষিণ এশিয়াতে কেবল বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ সবচেয়ে কম, বাজেটের মাত্র ২ শতাংশ। কিন্তু ইউনেস্কোর মতে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বাজেটের ৬ শতাংশ হওয়া উচিত। শিক্ষকদের আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদার উন্নতি ঘটানো এখন সময়ের দাবি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন খুলনা বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার। বক্তৃতা করেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. হুসাইন শওকত, অতিরিক্ত রেঞ্জ ডিআইজি জয়দেব চৌধুরী, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের পরিচালক মো. তবিবুর রহমান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) মো. ফিরোজ শাহ প্রমুখ।
পরে তিনি একই স্থানে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় করেন। এছাড়া দুপুরে নগরীর একটি হোটেলে ওয়ার্কশপে যোগ দেন।