যুক্তরাজ্যের তৈরি স্টর্ম শ্যাডো দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে প্রথমবারের মতো রাশিয়ার ভূখণ্ডে হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের একদিন পরেই যুক্তরাজ্যের ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে এই হামলা চালালো কিয়েভ। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
টেলিগ্রামে রুশ যুদ্ধ প্রতিবেদকেরা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে বুধবার (২০ নভেম্বর) এই হামলা হয়। শেয়ার করা ভিডিওতে অন্তত ১৪টি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, যা ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
একটি আবাসিক এলাকার কাছ থেকে ধারণ করা ওই ভিডিওতে দূরে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী উঠতে দেখা গেছে। স্থানীয়রা কুরস্ক অঞ্চলে ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন বলেও জানা গেছে।
এ বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের কার্যালয় কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এর আগে যুক্তরাজ্য জানিয়েছিল, স্টর্ম শ্যাডো ক্ষেপণাস্ত্র কেবল ইউক্রেনের ভূখণ্ডে ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে রাশিয়ার ভেতরেও এই ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের জন্য অনুমতির জন্য যুক্তরাজ্য দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ দিয়ে আসছিল।
এর আগে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে কুরস্ক অঞ্চলে হামলা চালায় ইউক্রেন। এর প্রতিক্রিয়ায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের নীতিমালা শিথিল করার ঘোষণা দেন। তবে যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, এই ঘটনায় তাদের পারমাণবিক প্রস্তুতি পরিবর্তনের কোনো প্রয়োজন নেই। চীন উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
এদিকে, বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনে মানববিধ্বংসী স্থলমাইন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছেন। একই সঙ্গে ২৭ কোটি ৫০ লাখ ডলারের নতুন সামরিক সহায়তা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্যাকেজে হিমার্স রকেট সিস্টেম, জাভেলিন ক্ষেপণাস্ত্র এবং অন্যান্য গোলাবারুদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
এক হাজার দিনেরও বেশি সময় ধরে চলমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বর্তমানে এক উত্তেজনাপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ এলাকা এখন রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে। কুরস্ক অঞ্চলে উত্তর কোরিয়ার সৈন্য মোতায়েনের খবর পাওয়া গেছে।
অন্যদিকে, জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলায় ইউক্রেনের পশ্চিমা সামরিক সহায়তার ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা পাওয়া বন্ধ হয়ে গেলে যুদ্ধে হেরে যাবে ইউক্রেন।