সঙ্গীত জগতের বিশাল একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি হলো রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি)। মুম্বাইয়ের ব্রিচ ক্যান্ডি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন ভারতের কিংবদন্তি গায়িকা লতা মঙ্গেশকর। এরই মধ্য দিয়ে অবসান ঘটলো একাধিক যুগের। তবে অবশিষ্ট রইলো তার কণ্ঠে বাংলাসহ ৩৬টি ভাষায় গাওয়া ৭ হাজার ৫০০টি গান।
‘পিয়া তোসে’ (গাইড), ‘আপ কি নজরো নে সমঝা’ (আনপড়), ‘লাগ জা গলে’, ‘নয়না বরসে রিমঝিম’ (উও কন থি), ‘তু জাহা জাহা চলে গা’ (মেরা সায়া), ‘চলতে চলতে’, ‘ইনহি লোগো নে’ (পাকিজা)-র মতো বিখ্যাত সব গানের জন্ম তার কণ্ঠেই। তার কণ্ঠে স্থান পেয়েছে ৪০০ এরও বেশি বাংলা গান।
১৯২৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর মারাঠি মঙ্গেশকর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন লতা মঙ্গেশকর। বাবা দীননাথ মঙ্গেশকর ছিলেন নাট্য অভিনেতা ও গায়ক। মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবার সাথে মঞ্চে গান গাইতে ওঠেন লতা। ১৯৪২ সালে মারাঠি ছবি ‘কিতী হাসল’ এ প্রথমবারের মতো সিনেমায় গান রেকর্ড করেন তিনি। তবে মুম্বাইয়ে আসার পর ‘সরু গলা’র অযুহাত দিয়ে তাকে নাকচ করে দেন মুম্বাইয়ের বাঙালি এক প্রযোজক। পরে এই লতাই হয়ে ওঠেন ভারতসহ সমস্ত বিশ্বের সঙ্গীতসম্রাজ্ঞী।
বহু পুরস্কার ও সম্মাননা আছে লতার অর্জনের ঝুলিতে। ২০০১ সালে তিনি ভারতের সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা ভারতরত্নে ভূষিত হন। এছাড়া ১৯৯৯ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মবিভূষণ এবং ১৯৬৯ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ অর্জন করেন তিনি। এছাড়া ২০০৭ সালে ফ্রান্স সরকার দেশটির সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা লেজিওঁ দনরের অফিসার খেতাব প্রদান করে লতাকে।
এছাড়া দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার (১৯৮৯), মহারাষ্ট্র ভূষণ পুরস্কার (১৯৯৭), এনটিআর জাতীয় পুরস্কার (১৯৯৯), জি সিনে আজীবন সম্মাননা পুরস্কার (১৯৯৯) এএনআর জাতীয় পুরস্কার (২০০৯), শ্রেষ্ঠ নারী নেপথ্য কণ্ঠশিল্পী বিভাগে ৩টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং ১৫টি বাংলা চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার ও ফিল্ম ফেয়ার আজীবন সম্মাননা পুরস্কারসহ অসংখ্য অর্জন আছে লতার।
তার মৃত্যুতে এরই মধ্যে ভারতের বিভিন্ন মন্ত্রী ও শিল্পীরা শোক প্রকাশ করেছেন। শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও।
পিএসএন/এমঅাই