সুন্দরবনে আজ থেকে শুরু হচ্ছে গোলপাতা আহরণ মৌসুম। চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত। পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জে দুটি গোলপাতা কূপ থেকে এ মৌসুমে সাত হাজার মেট্রিক টন গোলপাতা আহরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বন বিভাগ।
সোমবার (২৯ জানুয়ারি) চাঁদপাই রেঞ্জ থেকে পাশ-পারমিট নিয়ে বাওয়ালীরা গোলপাতা আহরণ সুন্দরবনের প্রবশ করবেন।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন অফিসার শেখ মো. আনিসুর রহমান জানান , ছোট বড় মিলিয়ে ২৭টি নৌকায় করে সোমবার থেকে উপকূলের বাওয়ালীরা গোলপাতা আহরণ সুন্দরবনের প্রবশ করবেন। চাঁদপাই রেঞ্জে দুটি গোলপাতার কূপ রয়েছে। একটি হলো শ্যালা গোলপাতা কূপ, অপরটি চাঁদপাই গোলপাতা কূপ। বাওয়ালিরা সুন্দরবনে যাতে নির্বিঘ্নে গোলপাতা কাটতে পারে তার জন্য বনবিভাগ থেকে যেমন নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা, তেমনি এ গোলপাতা আহরণে রয়েছে শর্তও।
তিনি বলেন, গোলপাতা আহরণের সময় বনের অন্য কোনো ধরনের গাছপালা কাটা যাবে না। কোনো বাওয়ালী যদি গোলপাতার পাশাপাশি অন্য প্রজাতির গাছ কাটেন কিংবা বনের ক্ষতি করেন তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বন আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এছাড়া এবার মৌসুমে প্রতি কুইন্টাল গোলপাতা আহরণে ভ্যাট ব্যতিত রাজস্ব নেওয়া হচ্ছে ৬০টাকা। তবে দিন দিন গোলপাতার ব্যবহার কমে আসায় কূপ থেকে গোলপাতা আহরণের পরিমাণ কমে আসছে। আগে যেখানে ১৫০-২০০ নৌকা ভর্তি গোলপাতা আহরণ হলেও গোলপাতা কম হওয়ায় এবার আহরণও কম হবে বলেও জানান বন বিভাগের এ কর্মকর্তা।
বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার দক্ষিণ চরের বাসিন্দা বাওয়ালি মোজাম্মেল হাওলাদার জানান, দীর্ঘ ১৩ বছর ধরেই সুন্দরবন থেকে গোলপাতা সংগ্রহ করে জীবিকা নির্বাহ করছি।শরণখোলা উপজেলার বারেক বয়াতী, একরাম ঘরামী জানান, প্রতিবছর গোলপাতা আহরণের আগে নৌকা মেরামত করা লাগে। গোলপাতা আগের মত এখন আর চলে না। ভালো দামও পাওয়া যায় না। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সংসার চালাতেও কষ্ট হয়। গোলপাতা আহরণের নৌকাগুলি অন্য কোনো কাজে ব্যবহার না হওয়ার কারণে গোলপাতার মৌসুম শেষ হলে নৌকাগুলো নদীর চরে ফেলে রাখতে হয়।
মোংলার গোলপাতা ব্যবসায়ী লিটন বলেন, বর্তমানে গোলপাতা মানুষের কাছে আগের মতো চাহিদা না থাকায় বিক্রি কমে গেছে। যার কারণে অনেকের আড়তে গত বারের পুরনো গোলপাতা এখনও রয়ে গেছে।