উপজেলা পর্যায়ে আদালত স্থাপন করার জন্য সুপারিশ করেছে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন। উপজেলা সদরের ভৌগোলিক অবস্থান, দূরত্ব ও মামলার চাপ বিবেচনা করে কোন উপজেলায় আদালত স্থাপন করা প্রয়োজন তা নির্ধারণ করতে হবে।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে কমিশন।
এতে বলা হয়, বর্তমানে যেসব স্থানে চৌকি আদালত আছে, সেগুলো সচল রাখার প্রয়োজন আছে কি না বা সেগুলোর ভৌগোলিক এখতিয়ার পুনর্বিন্যাসের প্রয়োজন আছে কি না, তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে।
কমিশনের সুপারিশে বলা হয়, উপজেলা আদালতগুলোতে জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ পর্যায়ের বিচারকদের পদায়ন করতে হবে এবং তাদের দেওয়ানি ও ফৌজদারি উভয় এখতিয়ার দিতে হবে। আইনগত সহায়তা কার্যক্রম ও বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা, বিশেষত মধ্যস্থতা পদ্ধতি উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সম্প্রসারিত করতে হবে।
কয়েক দফা সময় বাড়িয়ে বুধবার সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে সংবিধান, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন ও পুলিশ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন প্রতিবেদন জমা দিতে একাধিকবার সময় বাড়ায়। অংশীজন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে প্রায় চার মাস পর বিচার বিভাগের জন্য এ-সংক্রান্ত ‘৩০টি’ সংস্কার প্রস্তাব করেছে সংস্কার কমিশন।
৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নানা ক্ষেত্রে সংস্কার উদ্যোগের মধ্যে আট সদস্যের বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন গঠন করা হয় ৩ অক্টোবর। এই কমিশন বেশকিছু প্রস্তাব দিয়েছে খসড়া প্রতিবেদনে। এতে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠা, প্রধান বিচারপতি ছাড়া অন্য বিচারক নিয়োগে পৃথক কমিশন গঠন, দেশের সব প্রশাসনিক বিভাগে হাই কোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা, জেলা পর্যায়ে বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠা, উপজেলায় দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালত প্রতিষ্ঠা, স্থায়ী অ্যাটর্নি সার্ভিস গঠনের মতো সুপারিশ রয়েছে।