করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সৃষ্ট সংকটে চাকরি হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এবার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার। এর হাত ধরে আগামী বছরের মধ্যে ভারতের তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতে চাকরি হারাতে পারেন প্রায় ৩০ লাখ কর্মী। সম্প্রতি ব্যাংক অব আমেরিকার একটি প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
আইটি বিষয়ক পরামর্শক সংগঠন ন্যাসকমের পরিসংখ্যান অনুসারে, ভারতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বর্তমানে প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ মানুষ কাজ করছেন। তাদের মধ্যে নয় কোটি কর্মী কম দক্ষতার পরিষেবা এবং বিপিও’র (বিজনেস প্রসেস আইটসোর্সিং) সঙ্গে যুক্ত।
ব্যাংক অব আমেরিকার সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদন বলছে, ভারতের এই কর্মীদের মধ্যে ৩০ শতাংশকে আগামী বছরের মধ্যেই ছাঁটাই করা হবে। এর কারণ রোবটিক প্রসেস অটোমেশনসহ অন্যান্য উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার।
উন্নত এসব প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ায় ভারতে আইটি খাতের অন্তত ৩০ লাখ কর্মী চাকরি হারাবেন। অবশ্য এই পরিস্থিতি শুধু ভারতে নয়, প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রেও ১০ লাখ কর্মী চাকরিচ্যুত হতে পারেন।
ব্যাংক অব আমেরিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে ২০২২ সালের মধ্যে ভারতের টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (টিসিএস), ইনফোসিস, উইপ্রো, এইচসিএল, টেক মাহিন্দ্রা, কগনিজেন্ট-সহ অন্যান্য সংস্থায় কম দক্ষতার পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ৩০ লাখ কর্মী ছাঁটাই হতে পারেন। এর মধ্যে শুধু রোবটিক প্রসেস অটোমেশনের কারণেই চাকরি হারাতে পারেন সাত লাখ কর্মী।
রোবোটিক প্রসেস অটোমেশন মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর ভিত্তি করে স্বয়ক্রিয় পদ্ধতিতে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা প্রযুক্তির একটি রূপ। এটিকে কখনো কখনো সফটওয়্যার রোবোটিকস হিসেবেও উল্লেখ করা হয়।
বলা হচ্ছে, কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে বছরে অন্তত ১০০ বিলিয়ন ডলার খরচ কমবে আইটি সংস্থাগুলোর (ভারতীয় কর্মীদের বছরে ২৫ হাজার মার্কিন ডলার বেতন দেয়া হয় হিসাব করে)। অন্যদিকে, সাফল্যের সঙ্গে রোবটিক প্রসেস অটোমেশন ব্যবহারের ফলে সংস্থাগুলোর সামনে আগামী বছরের মধ্যে বাড়তি ১০ বিলিয়ন ডলার লাভ করার সম্ভাবনা থাকবে।
রোবটিক প্রসেস অটোমেশন যেহেতু ২৪ ঘণ্টাই কাজ করতে পারে, তাই মানুষের তুলনায় থেকে ১০ গুণ কাজ বেশি হবে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।