সাইটটিতে জেনারেটিভ এআইয়ের তৈরি ছবি মুছে ফেলা হয় যেটা ইনস্টাগ্রাম করে না। এর ফলে, নতুন এই অ্যাপে সত্যিকারের সৃজনশীল চিত্রকর্ম খোঁজার কাজটি সহজ হয়।
খুব দ্রুতই বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় অ্যাপ হয়ে উঠছে ‘কারা’, যা ইনস্টাগ্রামের বিকল্প হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখানোর পাশাপাশি এআই ব্যবহারে তৈরি শিল্পকর্মের বিপক্ষে স্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে।
চিত্র শিল্পীদের কথা মাথায় রেখে তৈরি অ্যাপটি অনেকটা ইনস্টাগ্রামের মতোই কাজ করে, যেখানে ব্যবহারকারী সাইন আপ করতে, ছবি আপলোড করতে, অন্যদের ছবি দেখতে ও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
তবে সাইটটিতে জেনারেটিভ এআইয়ের তৈরি ছবি মুছে ফেলা হয় যেটা ইনস্টাগ্রাম করে না। এর ফলে, নতুন এই অ্যাপে সত্যিকারের সৃজনশীল চিত্রকর্ম খোঁজার কাজটি সহজ হয়।
এদিকে, ইনস্টাগ্রামে এআইয়ের তৈরি কনটেন্টে লেবেল যোগ করা হলেও, সেটা অ্যাপে আপলোড ও প্রচার করার অনুমতি দেওয়া হয়। এ ছাড়া, ইনস্টাগ্রামের মালিক কোম্পানি মেটাও নিজস্ব কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক বিভিন্ন টুল বানাচ্ছে।
“আমরা বিভিন্ন জেনারেটিভ এআই টুলের প্রচলিত অনৈতিক পদ্ধতির সঙ্গে একমত নই। আর এদের ডেটাসেটে প্রাইভেসি সংশ্লিষ্ট জটিলতা নিয়ম মাফিক সুরাহা না হলে আমরা নিজেদের সাইটে এআইয়ের মাধ্যমে তৈরি পোর্টফোলিও হোস্ট করব না,” উল্লেখ রয়েছে কারা’র ওয়েবসাইটে।
এমনকি আইন মেনে শিল্পীদের সুরক্ষা নিশ্চিত হলেও এআই দিয়ে বানানো কনটেন্টে সবসময় লেবেল যোগ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কোম্পানিটি।
ইনস্টাগ্রামের বর্তমান অবস্থা নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে শঙ্কা বেড়ে যাওয়ার পরপরই কারা’র জনপ্রিয়তা বেড়েছে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে ব্রিটিশ দৈনিক ইন্ডিপেন্ডেন্ট। উদাহরণ হিসেবে, ২০২২ সালে ইনস্টাগ্রামের সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্যবহারকারীরা এমন এক পিটিশনে সমর্থন দিয়েছিলেন, যেখানে অ্যাপটির বিরুদ্ধে টিকটককে নকল করার ও ভিডিও’র দিকে বেশি মনযোগ দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়।
এ ছাড়া, মার্কিন সেলিব্রেটি কাইলি জেনার কোম্পানিকে সরাসরি আহ্বান জানিয়ে পোস্ট করেছিলেন, যেখানে উল্লেখ ছিল ‘মেইক ইনস্টাগ্রাম ইনস্টাগ্রাম এগেইন’, যা সে সময় প্ল্যাটফর্মটিতে ব্যপক শেয়ার হয়েছিল।
কারা’র এমন অগ্রগতির পেছনে আংশিকভাবে কাজ করেছে সম্ভবত ইনস্টাগ্রাম নিয়ে তৈরি হওয়া শঙ্কা, সেবাটি নিয়ে মেটার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ওপর কোম্পানির মনযোগ দেওয়ার বিষয়টিও।
এ ছাড়া, অনেকেই ফিডে বিভিন্ন পরিবর্তন আনার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। এর মানে, ইনস্টাগ্রাম এক সময় ছবি ফটো শেয়ারিং অ্যাপ হিসেবে পরিচিতি পেলেও সে তুলনায় এখন এতে রিল ও অন্যান্য পোস্ট দেখানোর প্রবণতা বেশি।
‘অ্যান্ট দ্য এল্ডার’ নামে পরিচিত একজন ট্যাটু শিল্পী ইন্ডিপেন্ডেন্টকে বলেছেন, প্ল্যাটফর্মের বর্তমান রূপ ও সম্পৃক্ততা কমে আসা নিয়ে ব্যবহারকারীদের মধ্যে ‘গড়পড়তা অসন্তোষ’ ছিল।
তার অনুমান বলছে, তার প্রতিটি পোস্ট মাত্র এক শতাংশ ফলোয়ারের কাছে পৌঁছায়। এমনকি ইনস্টাগ্রামের নীতিমালার অধীনে কখনও কখনও মানুষের ট্যাটুওয়ালা ছবিও সেন্সর করা হয়, যার ফল ভোগ করেন ট্যাটু শিল্পীরা।
“আমার ধারণা, প্রতিটি নতুন অ্যাপ, যেগুলো কিছুটা বাড়তি আকর্ষণ পায়, সেগুলো বিভিন্ন অ্যাপের গতানুগতিক গতিবিধি বুঝে ওঠার একটি উপায় হিসেবে কাজ করে। এমনকি এতে নতুন করে সত্যিকারের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর সম্ভাবনাও তৈরি হয় এতে।”
যে কোনো কারণেই হোক, এখন লাখ লাখ মানুষ কারায় যোগ দিয়েছেন, যার ফলে অ্যাপ স্টোরের তালিকায় শীর্ষস্থানের দিকে পাড়ি জমাচ্ছে অ্যাপটি।