ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে মুহুর্মুহু হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সোমবার কিয়েভের জার্মান দূতাবাসের একটি ভবনেও ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেছেন, ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে জার্মান দূতাবাসের ভিসা অফিস যে ভবনে রয়েছে সেটিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।
বার্লিনে এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রিশ্চিয়ান ওয়াগনার বলেন, ভিসা বিভাগের টাওয়ারটি ‘আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে’। তবে হামলার সময় ভিসা বিভাগটি বন্ধ ছিল এবং সেখানে কোনো কর্মচারী ছিল না।
এছাড়া জার্মান সরকারের মুখপাত্র স্টিফেন হেবেস্ট্রেট বলেছেন, জার্মানি রাশিয়ার হামলার ‘সম্ভাব্য সবচেয়ে জোরালো ভাষায়’ নিন্দা করছে।
তিনি বলেছিলেন যে, চ্যান্সেলর আগের দিন ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। জার্মানি এবং অন্যান্য জি-৭ রাষ্ট্রগুলো সংহতির আশ্বাস দিয়েছে।
হেবেস্ট্রিট জানিয়েছেন, জি-৭ রাজ্যের নেতারা মঙ্গলবার জেলেনস্কির সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলবেন।
তিনি আন্ডারলাইন করেছেন যে, জার্মানি ইউক্রেনের জন্য অতিরিক্ত সহায়তা জোগাড় করতে এবং ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামত করতে ‘সম্ভব সবকিছু’ করবে।
সোমবার হঠাৎ করে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভশহ বেশ কয়েকটি শহরে ব্যাপক মিসাইল হামলা শুরু করে রাশিয়া। এদিন অন্তত ৭৫টি মিসাইল হামলা করেছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। দেশটি দাবি করেছে যে, ইরানিয়ান ড্রোন দিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।
গত শনিবার রাশিয়ার সঙ্গে ক্রিমিয়ার সংযোগকারী সেতুতে বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণের জন্য ইউক্রেনকে দায়ী করেছে রাশিয়া। এর প্রতিশোধ নিতেই এসব হামলা চালানো হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য স্পেক্টেটর ইনডেক্স জানিয়েছে যে, হামলায় কিয়েভে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন কয়েক ডজন মানুষ।
সোমবার স্থানীয় সময় সকাল সোয়া আটটা নাগাদ কিয়েভসহ ইউক্রেনের একাধিক শহরে একের পর এক মিসাইল ছুড়তে থাকে রাশিয়া। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, শহরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গে নানা প্রান্তে লাগাতার বিস্ফোরণ ঘটেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির দাবি, রাশিয়া ইরানিয়ান ড্রোন ব্যবহার করেছে। এই হামলার ফলে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, ‘রাজধানীর কেন্দ্রে শেভচেনকিভস্কি জেলার বেশ কয়েকটি জায়গায় বিস্ফোরণ হয়েছে।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন যে, কের্চ ব্রিজে বিস্ফোরণ এবং ইউক্রেনের গোয়েন্দাদের দ্বারা পরিচালিত অন্যান্য ‘সন্ত্রাসী হামলার’ প্রতিক্রিয়া হিসাবে এই হামলা চালানো হয়েছে।
রাশিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ বলেছেন যে, ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ার প্রতিশোধমূলক হামলা প্রথম ঝলক ছিল এটি। আরও অপেক্ষা করছে।