বর্তমানে স্ক্রিনশটের নকল তৈরি করা অত্যন্ত সহজ বিষয়। অনলাইনে বিনামূল্যের টুল ব্যবহার করেই এসব করতে পারেন অনেকে। এখন অনেক বিশ্বাসযোগ্য স্ক্রিনশট স্ক্যাম বেড়িয়েছে। ফলে, অনেকেই পড়ে যান ফাঁদে।
একটি স্ক্রিনশট আসল না নকল সেটি বোঝার জন্য একটি নির্দেশনামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট হাও-টু গিক। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিস্তারিত।
ডেস্কটপে নেওয়া স্ক্রিনশট
ডেস্কটপে নেওয়া স্ক্রিনশটের বিষয়ে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করুন। ক্রোম, ফায়ারফক্স, ও অন্যান্য অনেক ব্রাউজার সহজেই ওয়েব পেইজের কোড এডিট করতে দেয়। ফলে অনেকেই অল্প থেকে বিনা পরিশ্রমে, সহজেই ওয়েব পৃষ্ঠার যে কোনো উপাদান পরিবর্তন করতে পারেন।
এটিকে ‘ইন্সপেক্ট এলিমেন্ট’ বলা হয়। ব্রাউজার কন্টেক্সট মেনু খুলতে ওয়েবসাইটের যেকোনো জায়গায় মাউস দিয়ে রাইট-ক্লিক করুন। এর নিচে ‘ইনস্পেক্ট’ অপশন পাবেন।
ফোন স্ক্রিনের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন। বেশিরভাগ সময়, সরাসরি প্রযুক্তিগত টুল ব্যবহার না করেই বোঝার উপায় থাকে।
পিক্সেল অসঙ্গতি
জাল স্ক্রিনশট তৈরির সবচেয়ে সাধারণ উপায় হল ছবির ওপরে অন্য উপাদান কপি করে পেস্ট করা। এটি পিক্সেলের ছোট প্যাচ বা অসঙ্গতি তৈরি করে যা বাকি ছবির সঙ্গে ঠিকঠাক মেলে না। এ ক্ষেত্রে যে জিনিসের ওপর বাড়তি নজর দেবেন তা হল সংখ্যা বা অক্ষর। ছবিটি জুম করে সূক্ষ্ম অসঙ্গতিগুলো খুঁজে বের করুন।
অনেক সময়ই কিছু অস্পষ্টতা বা তীক্ষ্ণতার অভাব খুঁজে পাবেন। আসল স্ক্রিনশটের সব জায়গায় একই রেজোলিউশন থাকবে। অস্বাভাবিক রং ও শ্যাডো বা ছায়ার পরিবর্তনও জাল স্ক্রিনশটের লক্ষণ হতে পারে।
ফন্ট ও স্পেসিং ভুল হতে পারে
সবার পক্ষে নির্দিষ্ট ফন্ট শনাক্ত করা কঠিন কাজ। একদম দক্ষ গ্রাফিক ডিজাইনারদেরও স্ক্রিনশটের ফন্ট খুঁজে পেতে সমস্যা হতে পারে। ফোন অ্যাপগুলো এরিয়াল বা টাইমস নিউ রোমানের মতো সাধারণ ফন্ট কমই ব্যবহার করে থাকে। ফলে, কেউ সঠিক ফন্ট খুঁজে না পেলে এমন সাধারণ চেহারার ফন্ট বসিয়ে এডিট করতে পারে।
ফন্টের মতোই, এগুলো সঠিক সাইজ ও স্পেসিং নিয়েও সমস্যায় পড়তে হবে। নকল স্ক্রিনশটে নির্ভুলভাবে এসব মিলিয়ে ফেলা খুবই কঠিন কাজ। তাই এ ধরনের অসঙ্গতির দিকেও নজর রাখুন।
অপ্রাসঙ্গিক বস্তু থাকতে পারে
বেশিরভাগ ফোন অ্যাপ যখন আপডেট করা হয় সেগুলোর ইন্টারফেইস সব সময় সূক্ষ্ম বা ক্ষেত্র বিশেষে বড় আকারে পরিবর্তিত হয়। নকল স্ক্রিনশটে অনেক সময় একই অ্যাপের বিভিন্ন সংস্করণের ইন্টারফেইস মিলে যেতে পারে। আর কেউ কোনো নির্দিষ্ট অ্যাপ ইন্টারফেইস ভালোভাবে চিনে থাকলে সেখানকার অসঙ্গতিগুলো ধরে ফেলতে পারবেন।
রিভার্স সার্চ করুন
এখন কিছুটা টেকনিকাল দিকে যাওয়া যাক। যে নকল স্ক্রিনশট তৈরি করছে, হতে পারে সে ইন্টারনেট থেকেই আসল স্ক্রিনশট ডাউনলোড করে পরে পরিবর্তন করেছে। এ কারণেই সন্দেহ হলে স্ক্রিনশটের বিষয়ে অনলাইনে সার্চ করে নেওয়া ভালো অপশন। গুগল ইমেজেস বা টিনআই ব্যবহার করে স্ক্রিনশটটি অনলাইনে সার্চ করে দেখুন।
মেটাডেটা পড়ুন
মেটাডেটা হল একটি ছবির ফাইলের আইডির মত। ছবিটি কখন এবং কোন ডিভাইসে নেওয়া সেসব তথ্য দেখায় মেটাডেটা৷ ফোনের স্ক্রিনশট প্রায়ই মেটাডেটার মধ্যে ফোনের নাম যুক্ত করে। আর কেউ ছবিটি পরিবর্তন করলে এ মেটাডেটায় পরিবর্তন আসবে।
কোনো ছবির মেটাডেটা দেখার জন্য, পিসি থেকে ফাইলের ওপর রাইট ক্লিক করুন। ‘প্রোপার্টিজ’ অপশনটি বেছে নিন। ‘ডিটেইলস’ ট্যাব থেকে মেটাডেটা দেখতে পারবেন।
সতর্ক থাকুন, অনেক সময় বিভিন্ন মেসেজিং অ্যাপও ছবির মেটাডেটায় পরিবর্তন আনতে পারে। ফলে, ডিভাইসের নাম মেটাডেটায় না থাকলেই যে সেটি নকল এমন ভাবার কারণ নেই। বিষয় হল, মেটাডেটায় ছবি প্রেরকের ডিভাইসের নাম অক্ষত অবস্থায় থাকলে সেটি ভালো চিহ্ন