অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দুই অতিরিক্ত সচিবকে সরিয়ে দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে ন্যস্ত করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। দু’জনের মধ্যে অমল কৃষ্ণ মণ্ডল বেশ কিছুদিন ধরে বিভাগটিতে অতিরিক্ত সচিবের পাশাপাশি সচিবের রুটিন দায়িত্বে ছিলেন, আর ড. নাহিদ হোসেন দীর্ঘদিন এ বিভাগে থেকে বীমা ও পুঁজিবাজার শাখার দায়িত্বে ছিলেন।নাজমা মোবারেক গত মাসের ৩১ তারিখ আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে গত ২১ আগস্ট থেকে নতুন সচিব আসার আগ পর্যন্ত অমল কৃষ্ণ মণ্ডল আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবের রুটিন দায়িত্ব পালন করেন।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ সময় ও এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ধরনের অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ হচ্ছে– বীমা ও আর্থিক খাতে জনবল নিয়োগসহ প্রভাব খাটিয়ে নানাভাবে অবৈধ অর্থ উপার্জন করা।
এদিকে ড. নাহিদ হোসেন প্রায় ১০ বছর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে উপসচিব, যুগ্মসচিব ও অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অধিকাংশ সময় পুঁজিবাজার, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান শাখায় কাজ করেন। তাঁর বিরুদ্ধে পুঁজিবাজার, বীমা ও আর্থিক খাতে প্রভাব খাটিয়ে অবৈধ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। অন্যান্য সম্পদের পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ায় তাঁর একটি বিলাসবহুল বাড়ি আছে। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর গত ২০ অক্টোবর থেকে তিনি ছুটি নিয়ে সেখানেই অবস্থান করছেন। সরকারি নথি অনুযায়ী ছুটি শেষে আগামী ২৫ নভেম্বর কাজে যোগ দেওয়ার কথা ছিল।
এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একই প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে আরও রদবদল করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির আরেক অতিরিক্ত সচিব বদরে মুনির ফেরদৌসকে বদলি করে পরিকল্পনা বিভাগে পাঠানো হয়েছে। সব মিলিয়ে বিভাগটির মোট সাত অতিরিক্ত সচিবের মধ্যে তিনজনকেই সরিয়ে দেওয়া হলো। এ তিনজনের জায়গায় অন্যান্য মন্ত্রণালয় ও দপ্তর থেকে নতুন অতিরিক্ত সচিব আনা হয়েছে। তারা হলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মাহমুদ হাসান, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আহসান কবীর এবং বাংলাদেশ কপিরাইট অফিসের কপিরাইট নিবন্ধক (অতিরিক্ত সচিব) দাউদ মিয়া এনডিসি।
বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ), মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি (এমআরএ), সাধারণ বীমা করপোরেশন, জীবন বীমা করপোরেশনসহ নানা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়ার কাজটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ করে থাকে। রাষ্ট্র মালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী ইত্যাদি ব্যাংকের চেয়ারম্যান, পরিচালক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) নিয়োগও এ বিভাগই দেয়; যদিও তাতে শর্ত উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘অনুমোদন সাপেক্ষে’। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের প্রস্তাব বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ফিরিয়ে দেওয়ার নজির নেই বললেই চলে।