খুলনা সিটি কর্পোরেশ নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান মুশফিক বলেছেন বুধবার খুলনা প্রেসক্লাবে তার নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। এ সময় তিনি তার ইশতেহারে খুলনাকে বাঁচানোর আহবান জানিয়ে ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে যেয়ে ভোট প্রদানের আহবান জানান। একই সঙ্গে তিনি বলেন, “আমাকে সুযোগ দিন আমি বদলে দেবো”।
খুলনা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত ইশতেহার ঘোষণায় তিনি বলেন, এই শহরকে ঘিরেই ছিল আমার অবারিত হৃদয় নিঃসৃত স্বপ্নমালা। আমার ছাত্র জীবনের প্রায় সবটাই ছিল এই শহরে। আমি যেখানেই যখন গেছি আমার খুলনার জনতা, তরুণ প্রজন্ম ছিল আমার হৃদয় গহ্বরে। আর এই সুদীর্ঘ পথচলায় একটি বিষয় আমার উপলব্ধিতে আসে। মানুষের পাশে দাঁড়াবার সব থেকে সহজ আর উৎকৃষ্ট পন্থা হলো রাজনীতিতে সরাসরি অনুপ্রবেশ করা।
তিনি বলেন, আমি খুলনা শহরকে নিয়ে অনেক পরিবল্পনা করে রেখেছি। যা সবগুলো এখানে বলা সম্ভব নয়, তবে স্বল্প পরিসরে নির্বাচনী ইশতেহারে নাগরিক পরিকল্পনার প্রবর্তন, নগর পরামর্শক কমিটি (যে কমিটিতে থাকবেন বিজ্ঞ নগর পরিকল্পনাবিদ, প্রকৌশলী, বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষক, ওলামায়ে কেরাম, নাগরিক নেতৃবৃন্দ, ধর্মীয় সংখ্যালঘু প্রতিনিধি, পিছিয়ে জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি, পরিবেশবিদ, প্রযুক্তিবিদ, সমাজসেবক, অর্থনীতিবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, শ্রমিক নেতাসহ বিভিন্ন পেশার অভিজ্ঞ ব্যক্তি), নাগরিক মর্যাদা ও সম্মান সংরক্ষণ এবং গুণীজন সম্মাননা, প্রতি তিন মাসে নাগকিদের সঙ্গে মুখোমুখি অনুষ্ঠান, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সহনশীল শহর হিসেবে গড়ে তোলা, মহানগরীর সড়ক উন্নয়ন ও বর্জ্য-বৃষ্টির পানি নিষ্কাশন, শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন, খালিশপুর শিল্পাঞ্চল পুনরুজ্জীবনের পদক্ষেপ, শিল্প ও কলকারখানা স্থাপনে সহযোগিতা দান, খুলনায় আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ একটি আর্ট গ্যালারি নির্মাণ, সুস্থ সাংস্কৃতিক চর্চার পরিবেশ সৃষ্টি, হোল্ডিং ট্যাক্স বৃদ্ধি না করে নতুন হোল্ডিং প্রাপ্তি সহজীকরণ, রিকশা, অটোরিকশা, ভ্যান, ইজিবাইকের লাইসেন্স প্রদান সহজতরকরণ, ক্ষুদ্র যানবাহনের লাইসেন্স প্রাপ্তির অজুহাতে টোকেন বাণিজ্যের নামে অবৈধ ব্যবসা রোধ, প্রশাসানিক কর্মকান্ডে বিকেন্দ্রীয়করণ ও প্যানেল মেয়রদের কর্মের পরিধি অনুযায়ী দাপ্তরিক দায়িত্ব প্রদান, শ্রমিক-কর্মচারীদের ৯০ মাসের গ্রাচ্যুইটি ফান্ড গঠন, হকার, ক্ষুদ্র যানবাহন শ্রমিকসহ সকল পর্যায়ের শ্রমিকদের পাশে থাকা, হতদরিদ্র ও ছিন্নমূলদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ, নগরীতে কেন্দ্রীয়ভাবে আধুনিক সুইমিংপুল নির্মাণসহ নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ড ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মিনি সুইমিংপুল নির্মাণ, নারী ও শিশুদের জন্য ওয়ার্কওয়ে তৈরি, কেসিসি’র সীমানা বৃদ্ধি, কেসিসি’র প্লানিং শাখায় পর্যাপ্ত দক্ষ জনবল নিয়োগ, হোল্ডিং ট্যাক্স-ট্রেড লাইসেন্সসহ আর্থিক সকল বিষয়ে অনলাইনে সেবা প্রদানে স্টেক হোল্ডারদের মাঝে স্মার্ট কার্ড প্রদান, সকল প্রকল্প এসডিজি আলোতে গঠনসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রকল্প গহণের উদ্যোগ নেবো।
তিনি বলেন, ‘আসুন খুলনাকে বাঁচাই’, যার মধ্য দিয়ে আগামী প্রজন্মের সুবসতি গড়ে উঠবে। আপনাদের কাছে আমার প্রার্থনা হলো: আপনারা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে নির্বাচনী কেন্দ্রে যাবেন। মনে চাইলে আমাকে ভোট দেবেন। না চাইলে যাকে মনে হয় তাকে ভোট দেবেন। তব্ওু আপনারা নির্বাচনকে সফল করে তুলবেন। কারণ আপনারাই হলেন এই দেশ ও জাতির স্বপ্নের সারথী। দয়া করে এই রাষ্ট্রের নির্বাচন প্রক্রিয়া ও এর স্বপ্নকে ব্যর্থতায় পরিগণিত হতে দেবেন না। কেন না প্রায় লক্ষাধিক তরুণ ভোটার প্রায় ১৫ বছর ভোটার হলেও নানা কারণে ভোট দিতে পারে না। তাদেরকে নিরাশ না করার জন্য ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিত হতে বলেন। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, খুলনাবাসী পরিবর্তন চায়, তাই কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বদলে দেবে পরিস্থিতি। সে কারণেই টেবিল ঘড়ি প্রতীক এখন খুলনাবাসীর প্রতিবাদের প্রতীক। আগামী ১২ জুন খুলনার নবীণ-প্রবীণ সকল ভোটারা ভোট বিপ্লবে অংশ নেবেন।
তার আগে সকালে তিনি, নগরীর ময়লাপোতা, বানগাতি বাজার, হাজী ইসমাইল লিংক রোড, নবপলী, গলামারী, নিরালা, শেরে বাংলা রোড, শেখপাড়া বাজারসহ বিভিন্ন স্থানে টেবিল ঘড়ি প্রতীকের নির্বাচনী প্রচারণা চালান।