পাকিস্তান সফরে যাচ্ছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর। সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) নামে একটি আঞ্চলিক জোটের বৈঠকে অংশ নিতে মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) দেশটিতে পৌঁছাবেন তিনি। সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সঙ্গে নৈশভোজে যোগ দেবেন জয়শঙ্কর।
এর আগে ২০১৫ সালে ভারতের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ আফগানিস্তান নিয়ে একটি সম্মেলনে যোগ দিতে ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন। তার পরের বছর সার্ক-ভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে অংশ নিতে ইসলামাবাদে গিয়েছিলেন ভারতের তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। সেটাই ছিল শেষবার পাকিস্তানের মাটিতে কোনো বহুপাক্ষিক সম্মেলনে ভারতের যোগদান।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫ সালের পর অর্থাৎ গত প্রায় ১০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো কোনো ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে পাকিস্তানে যাচ্ছেন জয়শঙ্কর। আর সেখানে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ আয়োজিত নৈশভোজ এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই তার।
শেহবাজ শরিফ ছাড়াও ওই নৈশভোজে থাকবেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। ক্যালেন্ডারের হিসেবে দুই দিনের সফর হলেও, আদতে ২৪ ঘণ্টারও কম সময় পাকিস্তানে থাকবেন জয়শঙ্কর।
ভারতীয় কূটনীতিকরা বলছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্করকে পাকিস্তানে পাঠানো মোদী সরকারের খুবই বুদ্ধিমান ও তাৎপর্যপূর্ণ সিদ্ধান্ত। সম্প্রতি একটি বক্তৃতায় জয়শঙ্কর বলেছিলেন, অবশ্যই ভারত যে কোনো প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মতোই, পাকিস্তানের সঙ্গে সহজ সম্পর্ক চায়। কিন্তু তা সন্ত্রাসবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে নয়।
নয়াদিল্লির বক্তব্য, এসসিও’র প্রতি ভারতের যে দায়বদ্ধতা থেকেই জয়শঙ্করকে পাকিস্তানে পাঠানো হচ্ছে। তাকে জয়শঙ্করকে পাকিস্তানে পাঠিয়ে নয়াদিল্লি এই বার্তাটাই দিতে চাইছে যে, দ্বিপাক্ষিক সংঘাতের ঊর্ধ্বে উঠে তারা বহুপাক্ষিক আলোচনা ও কূটনীতিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে চায়।
পাশাপাশি, অস্থির ও অগ্নিগর্ভ প্রতিবেশী বলয়ে ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাকিস্তান সফর একটি সার্বিক ইতিবাচক বার্তা বহন করবে বলেই মনে করছে কূটনৈতিক মহল। জয়শঙ্করের দাবি, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করতে নয়, বরং এসসিও’র একনিষ্ঠ সদস্য হিসেবেই যাচ্ছি।
ভারত আগেই জানিয়েছিল, জয়শঙ্করের এই সফরের সঙ্গে ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের কোনো সম্পর্ক নেই। রোববার (১৩ অক্টোবর) পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেছেন, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে কোনো ঠকের অনুরোধ পাইনি। আমরাও তেমন কোনো আবেদন করিনি। তবে প্রোটোকল অনুযায়ী সব দেশের নেতাদের মতো ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও স্বাগত জানানো হবে।
এদিকে সাংহাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের (এসসিও) সম্মেলনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে রাজধানী ইসলামাবাদে লকডাউন জারি করেছে পাকিস্তানের সরকার। সেই সঙ্গে ইসলামাবাদ ও পার্শ্ববর্তী রাওয়ালপিন্ডিতে তিনদিনের সরকারি ছুটিও ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচটি জেলায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।