‘আগামী নির্বাচন বিএনপির জন্য এতো সহজ নয়, জনগণই ম্যাটার্স’ বলে দলের নেতাকর্মীদের স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে জনগণ বুঝিয়ে দিয়েছে তারাই গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই আমরা যদি ভুল করি জনগণ কিন্তু আবার কোনোকিছু একটা বুঝিয়ে দেবে। তখন কিন্তু পস্তাতে হবে, তখন কিন্তু হা-হুতাশ করতে হবে।
রোববার বিকেলে বিএনপির আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তারেক রহমান। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, এখনও সময় আছে- আসুন আমরা জনগণের পাশে থাকি, জনগণের সঙ্গে থাকি। যারা এমন কিছু করবে যা আপনাকে-আমাকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে, দলকে ক্ষতিগ্রস্থ করবে- তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলব।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত কয়েক মাস ধরে বলছি, সামনের নির্বাচন এতো সহজ নয়- আপনারা যত সহজ ভাবছেন। একেবারে গ্রামের ওয়ার্ড পর্যায়ে দলের শাখা-প্রশাখা থাকলেও জনগণ ম্যাটারস। সেই জনগণ হচ্ছে আমাদের শক্তি, জনগণ হচ্ছে আমাদের ভরসা। এই জনগণই ৫ আগস্ট বুঝিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা কে ছোট নেতা-বড় নেতা, কে গ্রামের-ইউনিয়নের নেতা, কে বিভাগীয়-কেন্দ্রীয় নেতা- বিষয় এটি নয়। বিষয় হচ্ছে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে, আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়তে হবে। আমাদেরকে এমনভাবে দাঁড়াতে হবে যাতে জনগণ বুঝে- আমরা তাদের সঙ্গে আছি, তাদের পাশে আছি। এই হোক আজকে আমাদের শপথ।
তারেক রহমান বলেন, রাষ্ট্রের সরকারের প্রতিটি পর্যায়ে সেটি জাতীয় সংসদ হোক, সেটি পৌর সভা হোক কিংবা ইউনিয়ন পরিষদই হোক না কেন, সব জায়গায় জাবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। রাষ্ট্রের সমাজের সকল স্তরে যদি আমরা জবাবদিহিতা তৈরি করতে পারি তাহলে ধীরে ধীরে আমরা এগুতে সক্ষম হব।
বিএনপির নেতাকর্মীদের ১৭ বছরের নির্যাতন-নিপীড়ন, মামলা-কারাভোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিএনপির ৬০ লক্ষ নেতাকর্মীর নামের বিভিন্ন মিথ্যা-গায়েবি মামলা আছে। শুধু মাত্র জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে বিএনপিরই প্রায় ৫’শ মতো নেতাকর্মী শহীদ হয়েছেন, হাজারের মতো নেতাকর্মী বিভিন্নভাবে জখম হয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীরা যারা অত্যাচার-নির্যাতন সহ্য করেছেন। আর এখন যারা মোটরসাইকেলের বহর নিয়ে ঘুরে বেড়ায়, তারা কি অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করেছে? অবশ্যই নয়। এদেরকে ভিড়তে দেবেন না।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সভাপতিত্বে ও প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আবদুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমেদ, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, যুব দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বক্তব্য রাখেন।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কবি আবদুল হাই শিকদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ।