প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেক ঝড় ঝঞ্ঝাট, বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছি। আর এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে নিজেদের টাকায়। আজ শুক্রবার বিকেলে মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা দিয়েছেন, আমাদের শিখিয়েছেন মাথা উচুঁ করে চলতে। বাঙালি জাতিকে বিশ্বের দরবারে মাথা উচুঁ করে চলতে শিখিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, বিশ্বে খরস্রোতা নদীর মধ্যে পদ্মা নদী দ্বিতীয়। সেই নদীর ওপর সেতু নির্মাণের জন্য ২০০১ সালের ৪ জুলাই ভিত্তিপ্রস্তর করা হয়েছিল। পরবর্তীতে গ্যাস বিক্রি না করায় আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসতে পারেনি। গ্যাস বিক্রি করে শেখ মুজিবের মেয়ে ক্ষমতায় আসবে না। কিন্ত সেই সময় খালেদা জিয়া দেশের গ্যাস বিক্রি করতে রাজি হয়ে ক্ষমতায় এসেছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, দেশবাসী পাশে ছিল বলেই জ্ঞানীগুণীদের বাঁধা সত্ত্বেও সব অতিক্রম করে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে পেরেছি। সবাই না করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই জটিল স্থাপনা আমরা নির্মাণ করতে পেরেছি৷ আন্তর্জাতিকভাবে এখন আমরা বুক ফুলিয়ে গর্বের সঙ্গে চলছি। আগামী দিনে যত বাধাই আসুক, অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘সেতু নির্মাণে জড়িত সব শ্রমিক-কর্মকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই আমি আজ এখানে এসেছি। দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণত কোনো প্রকল্প শেষ হলে অনুষ্ঠান হয় না। কিন্তু পদ্মা সেতুর বিষয়টি একেবারেই আলাদা। যারা এই কাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ছিলেন, তাদের কৃতজ্ঞতা জানাতেই এই অনুষ্ঠান।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে কথিত দুর্নীতির প্রমাণ চেয়েছিলাম আমি। মন্ত্রী-উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে বলেছিলেন তারা, আমি করিনি। পদ্মা সেতু নিজেদের টাকায় করেছি।
শেখ হাসিনা বলেন, একটা ব্যাংকের এমডির পদের জন্য একজন নোবেলজয়ী এত লালায়িত কেন, সেই প্রশ্নের উত্তর আজও পেলাম না। হুমকি দেওয়া হয়েছিল, এমডি পদ না থাকলে পদ্মা সেতুর অর্থায়ন বন্ধ হয়ে যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ড. ইউনূসকে নিয়ে কোনো মার্কিনির কথা শুনব না। দেখাও করব না। বলে দিয়েছিলাম তাদের। এমডি পদে থাকতে পারল না বলে হিলারি ক্লিনটনের মাধ্যমে সেতুর টাকা বন্ধ করল। মালয়েশিয়া সরকার পদ্মা সেতুতে টাকা দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিজেদের টাকায় করেছি এটা।
পদ্মা সেতুর উত্তর থানা সংলগ্ন মাঠে এই সমাপনী অনুষ্ঠান ও সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এই একই মাঠে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন ও রেল সংযোগ প্রকল্পের অনুষ্ঠান হয়েছিল।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সেতু বিভাগের সচিব মো. মনজুর হোসেন। এরপর প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। বিকেল সভাপতির বক্তব্য দেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এরপরই প্রধান অতিথির ভাষণ রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।