উচ্চ রক্তচাপ ও হৃ্দরোগের ঝুঁকিবিষয়ক এক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকির অন্যতম কারণ হিসেবে অতিরিক্ত লবণ খাওয়াকে দায়ী করছেন।
তারা বলেন, অতিরিক্ত লবণ খাওয়ার কারণে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। প্রতিদিন একজন মানুষের ৫ গ্রাম অর্থাৎ এক চা চামচ লবণ খাওয়া দরকার। তবে দেখা যায় লবণ গ্রহণের মাত্রা কয়েকগুণ বেশি। শুধু ভাত-তরকারিতে নয়, না জেনে বাইরের খাবার থেকেও শরীরে ঢুকছে মাত্রাতিরিক্ত লবণ। যে কারণে বাড়ছে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি।
বৃহস্পতিবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর বাংলামোটরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স-বিআইপির মিলনায়তনে ‘হাইপারটেনশন অ্যান্ড হার্ট হেলথ’ শীর্ষক সাংবাদিক কর্মশালায় বিশেষজ্ঞরা এসব কথা বলেন। ২৮ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত দুদিনব্যাপী পরপর দুটি সাংবাদিক কর্মশালায় এসব তথ্য জানানো হয়। আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের (জিএইচএআই) সহায়তায় গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান) কর্মশালাগুলো আয়োজন করে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, অতিরিক্ত লবণ বন্ধ করতে পারলে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমবে। বাংলাদেশে প্রতি ৫ জনে একজন (২১ শতাংশ) প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে। উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত অর্ধেক নারী (৫১ শতাংশ) এবং দুই-তৃতীয়াংশ পুরুষ (৬৭ শতাংশ) জানেই না যে তাদের উচ্চ রক্তচাপ রয়েছে। এ বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি, ওষুধ এবং চিকিৎসাসেবা সহজলভ্য করতে হবে। উচ্চ রক্তচাপের কারণে হৃদরোগ এবং হৃদরোগজনিত মৃত্যুঝুঁকি বহুগুণ বেড়ে যায়।
বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে, ২০১৮ এর তথ্য দিয়ে কর্মশালায় জানানো হয় উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্তদের মধ্যে ওষুধ গ্রহণের মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে প্রতি ৭ জনে একজনেরও কম।
গ্লোবাল বারডেন অব ডিজিজ স্টাডি, ২০১৯ এর তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মৃত্যু এবং পঙ্গুত্বের প্রধান তিনটি কারণের একটি উচ্চ রক্তচাপ। দেশে উচ্চ রক্তচাপ বিষয়ে প্রশিক্ষিত কর্মী রয়েছে মাত্র ২৯ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মজিবুল হক, স্বাস্থ্য অধিদফতরের অসংক্রামক রোগনিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বাংলাদেশের ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. সৈয়দ মাহফুজুল হক, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিক্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান, জিএইচএআই বাংলাদেশ কান্ট্রি লিড মো. রূহুল কুদ্দুস, প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
পিএসএন/এমঅাই