ইসলামে অজু একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের মতো রাতে ঘুমোতে যাওয়ার আগেও মহানবী (স.) এবং সাহাবায়ে-কেরাম অজু করতেন। এটি ফরজ না হলেও খুবই ফজিলতপূর্ণ সুন্নত আমল। রাতে ঘুমানোর আগে অজু করতে উৎসাহিত করা হয়েছে হাদিসে। বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘যখন তুমি বিছানায় যাবে, তখন তুমি অজু করবে—নামাজের সময় যেমন করো। অতঃপর ডান পাশে ফিরে শয্যাগ্রহণ করবে।…’ (সহিহ বুখারি: ৬৩১১)
ফেরেশতা ক্ষমা প্রার্থনা করেন
আব্দুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা তোমাদের দেহগুলোকে পবিত্র রাখবে, আল্লাহ তোমাদের পবিত্র করুন। যদি কোনো বান্দা অজু অবস্থায় ঘুমায় তাহলে তার পোশাকের মধ্যে একজন ফেরেশতা শুয়ে থাকেন। রাতে যখনই এ ব্যক্তি নড়াচড়া করে তখনই এ ফেরেশতা বলেন, হে আল্লাহ আপনি এ ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিন, কারণ সে অজু অবস্থায় ঘুমিয়েছে।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৩/৩২৮; আলবানি, সহিহুত
আরও পড়ুন: ১১ শ্রেণির মানুষের জন্য ফেরেশতারা দোয়া করেন
নিশ্চিত দোয়া কবুলের সময়
অন্য হাদিসে মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘কোনো মুসলিম যদি অজু অবস্থায় (আল্লাহর জিকিরের ওপর) ঘুমায়, এরপর রাতে কোনো সময় হঠাৎ তার ঘুম ভেঙে যায় এবং সে (ওই অবস্থায় শুয়ে শুয়ে) আল্লাহর কাছে তার জাগতিক বা পরলৌকিক কোনো কল্যাণ কামনা করে, তাহলে আল্লাহ তাকে তার প্রার্থিত বস্তু দিবেনই (অর্থাৎ কোনো সন্দেহ নেই)। (নাসায়ি, আস সুনানুল কুবরা: ৬/২০২; আবু দাউদ: ৪/৩১০, নম্বর: ৫০৪২। হাদিসটি সহিহ)
কোনো হাদিসে বলা হয়েছে, সর্বদা অজু অবস্থায় থাকলে এবং এ অবস্থায় মৃত্যু হলে শহিদের মর্যাদা লাভ হয়। হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুল (স.) আমাকে বলেছিলেন, ‘হে আমার বেটা! সম্ভব হলে সবসময় অজু অবস্থায় থাকবে। কেননা মৃত্যুর ফেরেশতা অজু অবস্থায় যার জান কবজ করেন তার শাহাদাতের মর্যাদা লাভ হয়।’ (শুয়াবুল ঈমান, বায়হাকি: ২৭৮৩)
অতএব যখনই শয্যা গ্রহণের প্রয়োজন হবে তখনই অজু করে নেওয়া মুমিন মুসলমানের জন্য বাঞ্ছনীয়। এতে হাদিসে বর্ণিত সকল ফজিলত লাভ হবে ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঘুমানোর আগে অজু করার তাওফিক দান করুন। আমিন।